১২তম অধ্যায়: হেদায়েত ও দ্বীন সংক্রান্ত আয়াতসমূহ

হেদায়েত সম্পর্কিত বাণীসমূহ

هُدًى وَّرَحْمَةً لِّلْمُحْسِنِيْنَ۝ الَّذِيْنَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكَوٰةَ وَهُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ يُوْقِنُوْنَ۝ اُوْلٰٓئِكَ عَلٰى هُدًى مِّنْ رَّبِّهِمْ وَاُوْلٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ۝

“হেদায়েত ও রহমত সৎকর্মপরায়ণদের জন্য। যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখেরাত সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। এসব লোকই তাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে আগত হেদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এরাই সফলকাম।” (৩১:৩ – ৫)

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ও তাঁর রসূলের (সা) এর প্রদর্শিত দ্বীন ইসলামের সুপথই হলো হেদায়েত। হেদায়েতের মালিক একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা– তিনি অন্তর্যামী, বান্দার অন্তরের অবস্থা বুঝেই তিনি তাঁর অনুগত বান্দাকে হেদায়েত দান করেন । এ সর্ম্পকে তিনি তাঁর নবী (সা)-কে বলেন, “আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না, তবে আল্লাহ তা’আলাই যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। কে সৎপথে আসবে, সে সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন।” (২৮:৫৬)। অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, “…আল্লাহ্ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা পরিবর্তন করে…।” (১৩:১১)। হেদায়েতের দু’টি মূল উৎস হলো: আল্লাহর কিতাব পবিত্র কুরআন ও নবী হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর সুন্নাহ্। হেদায়েতপ্রাপ্তির জন্য মন ও মননের যে অবস্থা সৃষ্টি করা প্রয়োজন তা হলো:

  • সত্যকে জানা ও বোঝা এবং সত্য পথে চলার আগ্রহ পোষণ করা।

  • বান্দার অন্তরে যখন সত্য ও ন্যায়ের পথে চলার অদম্য ইচ্ছা জাগ্রত হয় তখন তার অন্তরে এমন উপলব্ধী ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টি হয় যা তাকে সত্য পথ অবলম্বনের তাকীদ দেয়। এ অবস্থায় হেদায়েতর আলো তার অন্তরকে আলোকিত করে, তার ঈমান নসীব হয় এবং পবিত্র কুরআন ও হাদীসের পথ-নির্দেশনা তার আত্মশুদ্ধি ও সুপথে চলার বাসনাকে সুগম করে তোলে।

  • বান্দা যখন বিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে সৎকর্মের পথে ধাবিত হয় তখনই তার ভাগ্যে হেদায়েত নসীব হয় এবং তার ওপর আল্লাহ্ তায়ালার রহমত বর্ষিত হয়।

উপরোক্ত অবস্থা যখন পরিপূর্ণতা লাভ করে তখন একে হেদায়েত–প্রাপ্তি বলা হয়। হেদায়েতপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ প্রকৃত মু’মিন–মুসলমান নামে পরিচিত।

হেদায়েত সম্পর্কিত আয়াতসমূহ নীচে উদ্ধৃত করা হলো:

اُوْلٰٓئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوٰتٌ مِنْ رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ وَاُوْلٰٓئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْنَ۝

“তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত।” (২:১৫৭)

ذٰلِكَ هُدَى اللهِ يَهْدِىْ بِه مَنْ يَّشَآءُ مِنْ عِبَادِه وَلَوْ اَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ۝

“এটি (দ্বীন–ইসলাম) আল্লাহর হেদায়েত। স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা, এপথে চালান। যদি তারা শিরকি করত, তবে তাদের কাজ কর্ম তাদের জন্যে ব্যর্থ হয়ে যেত।” (৬:৮৮)

يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُمْ بُرْهٰنٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَاَنْزَلْنَاۤ اِلَيْكُمْ نُوْرًا مُّبِيْنًا۝ فَاَمَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللهِ وَاعْتَصَمُوْا بِه فَسَيُدْخِلُهُمْ فِىْ رَحْمَةٍ مِّنْهُ وَفَضْلٍ وَيَهْدِيْهِمْ اِلَيْهِ صِرٰطًا مُّسْتَقِيْمًا۝

“হে মানবকুল! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো অবতীর্ণ করেছি। অতএব, যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাতে দৃঢ়তা অবলম্বন করেছে তিনি তাদেরকে স্বীয় রহমত ও অনুগ্রহের আওতায় স্থান দেবেন এবং নিজের দিকে আসার মত সরল পথে তুলে দেবেন।” (৪:১৭৪ – ১৭৫)

قُلْنَا اهْبِطُوْا مِنْهَا جَمِيْعًا ج فَاِمَّا يَاْتِيْنَّكُمْ مِّنِّىْ هُدًى فَمَنْ تَبِعَ هُدَاىَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ۝

“আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে।” (২:৩৮)

اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوْا الصّٰلِحٰتِ يَهْدِيْهِمْ رَبُّهُمْ بِاِيْمٰنِهِمْ تَجْرِىْ مِنْ تَحْتِهِمُ الْاَنْهٰرُ فِى جَنّٰتِ النَّعِيْمِ۝ دَعْوٰىهُمْ فِيْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيْهَا سَلٰمٌ وَاٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ۝

“অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদেরকে হেদায়েত দান করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে। এমন সুখময় কানন–কুঞ্জের প্রতি যার তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ। সেখানে তাদের প্রার্থনা হল ‘পবিত্র তোমার সত্তা হে আল্লাহ’। আর শুভেচ্ছা হল ‘সালাম’ আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হয়, ‘সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য’ বলে।” (১০:৯ – ১০)

وَكَذٰلِكَ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ رُوْحًا مِّنْ اَمْرِنَا مَا كُنْتَ تَدْرِىْ مَا الْكِتٰبُ وَلَا الْاِيْمٰنُ وَلٰكِنْ جَعَلْنٰهُ نُوْرًا نَّهْدِىْ بِه مَنْ نَّشَآءُ مِنْ عِبَادِنَا وَاِنَّكَ لَتَهْدِىۤ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝ صِرٰطِ اللهِ الَّذِىْ لَه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ اَلَاۤ اِلَى اللهِ تَصِيْرُ الْاُمُوْرُ۝

“এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক (ওহীবাহক) ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয় আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন। (সে পথ) আল্লাহরই পথ, যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল যা কিছু আছে, সব কিছুরই মালিক। শুনে রাখ, আল্লাহ তা’আলার দিকেই সব বিষয় ধাবিত হয়।” (৪২:৫২ – ৫৩)

لَاۤ اِكْرَاهَ فِى الدِّيْنِ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَىِّ فَمَنْ يَكْفُرْ بِالطّٰغُوْتِ وَيُؤْمِنۢ بِاللهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى لَا انْفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ۝

“দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাঙ্গবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।” (২:২৫৬)

اَفَاَنْتَ تُسْمِعُ الصُّمَّ اَوْ تَهْدِى الْعُمْىَ وَمَنْ كَانَ فِىْ ضَلٰلٍ مُّبِيْنٍ۝ فَاِمَّا نَذْهَبَنَّ بِكَ فَاِنَّا مِنْهُمْ مُّنْتَقِمُوْنَ۝ اَوْ نُرِيَنَّكَ الَّذِىْ وَعَدْنٰهُمْ فَاِنَّا عَلَيْهِمْ مُّقْتَدِرُوْنَ۝ فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِىۤ اُوْحِىَ اِلَيْكَ اِنَّكَ عَلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝

“আপনি কি বধিরকে শোনাতে পারবেন? অথবা যে অন্ধ ও যে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত, তাকে পথ প্রদর্শন করতে পারবেন? অতঃপর আমি যদি আপনাকে নিয়ে যাই, তবু আমি তাদের কাছে থেকে প্রতিশোধ নেব। অথবা যদি আমি তাদেরকে যে আযাবের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখিয়ে দেই, তবু তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। অতএব, আপনার প্রতি যে ওহী নাযিল করা হয়, তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করুন। নিঃসন্দেহে আপনি সরল পথে রয়েছেন।” (৪৩:৪০ – ৪৩)

اِنَّكَ لَا تَهْدِىْ مَنْ اَحْبَبْتَ وَلٰكِنَّ اللهَ يَهْدِىْ مَنْ يَّشَآءُ وَهُوَ اعْلَمُ بِالْمُهْتَدِيْنَ۝ وَقَالُوْۤا اِنْ نَّتَّبِعِ الْهُدٰى مَعَكَ نُتَخَطَّفْ مِنْ اَرْضِنَاۤ اَوَلَمْ نُمَكِّنْ لَّهُمْ حَرَمًا اٰمِنًا يُجْبٰىۤ اِلَيْهِ ثَمَرٰتُ كُلِّ شَىْءٍ رِّزْقًا مِّنْ لَّدُنَّا وَلٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ۝

“আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না, তবে আল্লাহ তা’আলাই যাকে ইচ্ছা সৎপথে আনয়ন করেন। কে সৎপথে আসবে, সে সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন। তারা বলে, যদি আমরা আপনার সাথে সুপথে আসি, তবে আমরা আমাদের দেশ থেকে উৎখাত হব। আমি কি তাদের জন্যে একটি নিরাপদ হরম প্রতিষ্ঠিত করিনি? এখানে সর্বপ্রকার ফল –মূল আমদানী হয় আমার দেয়া রিযিকস্বরূপ। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।” (২৮:৫৬ – ৫৭) ।”

قُلْ اِنَّمَاۤ اَتَّبِعُ مَا يُوْحٰىۤ اِلَىَّ مِنْ رَّبِّىْ هٰذَا بَصَاۤئِرُ مِنْ رَّبِّكُمْ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ۝

“…..(হে নবী) বলুন, আমার প্রতিপালকের কাছ থেকে আমি যে বিষয়ে প্রত্যাদেশ পেয়েছি আমি তো শুধু তাই অনুসরণ করি। এ (কুরআন) তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য প্রেরিত দলিল, হেদায়েত (পথনির্দেশ) ও দয়া”।” (৭:২০৩)

اللَّهُ نَزَّلَ أَحْسَنَ الْحَدِيثِ كِتَابًا مُّتَشَابِهًا مَّثَانِيَ تَقْشَعِرُّ مِنْهُ جُلُودُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ ثُمَّ تَلِينُ جُلُودُهُمْ وَقُلُوبُهُمْ إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكَ هُدَى اللَّهِ يَهْدِي بِهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ هَادٍ

“আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ, এর মাধ্যমে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।” (৩৯:২৩)

هُوَ الَّذِىۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَه بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيْظْهِرَه عَلَى الدِّيْنِ كُلِّه وَكَفٰى بِاللهِ شَهِيْدًا۝

“তিনিই তাঁর রাসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। সত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট।” (৪৮:২৮)

وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تُؤْمِنَ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ۝ قُلِ انْظُرُوْا مَاذَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا تُغْنِى الْاٰيٰتُ وَالنُّذُرُ عَنْ قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُوْنَ۝ فَهَلْ يَنْتَظِرُوْنَ اِلَّا مِثْلَ اَيَّامِ الَّذِيْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِهِمْ قُلْ فَانْتَظِرُوْۤا اِنِّى مَعَكُمْ مِّنَ الْمُنْتَظِرِيْنَ۝

“আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না তাদের উপর। তাহলে আপনি বলে দিন, চেয়ে দেখ তো আসমানসমুহে ও যমীনে কি রয়েছে। আর কোন নিদর্শন এবং কোন ভীতিপ্রর্দশনই কোন কাজে আসে না সেসব লোকের জন্য যারা মান্য করে না। সুতরাং এখন আর এমন কিছু নেই, যার অপেক্ষা করবে, কিন্তু সেসব দিনের মতই দিন, যা অতীত হয়ে গেছে এর পূর্বে। আপনি বলুন, এখন পথ দেখ; আমিও তোমাদের সাথে পথ চেয়ে রইলাম।” (১০:১০০ – ১০২)

وَالَّذِيْنَ اهْتَدَوْا زَادَهُمْ هُدًى وَّاٰتٰىهُمْ تَقْوٰىهُمْ۝

“যারা সৎপথপ্রাপ্ত হয়েছে, তাদের সৎপথপ্রাপ্তি আরও বেড়ে যায় এবং আল্লাহ তাদেরকে তাকওয়া ও সংযম দান করেন।” (৪৭:১৭)

قُلْ اِنَّ الْهُدٰی هُدَی اللّٰهِ ۝

“……..বলে দিন, নিঃসন্দেহে হেদায়েত সেটাই, যে হেদায়েত আল্লাহ করেন….।” (৩:৭৩)

وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِىْ كُلِّ اُمَّةٍ رَّسُوْلًا اَنِ اعْبُدُوْا اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطّٰغُوْتَ فَمِنْهُمْ مَّنْ هَدَى اللهُ وَمِنْهُمْ مَّنْ حَقَّتْ عَلَيْهِ الضَّلٰلَةُ فَسِيْرُوْا فِى الْاَرْضِ فَانْظُرُوْا كَيْفَ كَانَ عٰقِبَةُ الْمُكَذِّبِيْنَ۝ اِنْ تَحْرِصْ عَلٰى هُدٰىهُمْ فَاِنَّ اللهَ لَا يَهْدِىْ مَنْ يُّضِلُّ وَمَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِيْنَ۝

“আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর এবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়েত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামীতা অবধারিত হয়ে গেল। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে। আপনি তাদেরকে সুপথে আনতে আগ্রহী হলেও আল্লাহ যাকে বিপথগামী করেন তিনি তাকে পথ দেখান না এবং তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই।” (১৬:৩৬ – ৩৭)

وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلْفَیْنَا عَلَیْهِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَ لَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ شَیْئًا وَّ لَا یَہْتَدُوْنَ ۝

“আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ–দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও।” (২:১৭০)

قُلْ اَنَدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا یَنْفَعُنَا وَ لَا یَضُرُّنَا وَ نُرَدُّ عَلٰۤی اَعْقَابِنَا بَعْدَ اِذْ هَدٰىنَا اللّٰهُ كَالَّذِی اسْتَہْوَتْهُ الشَّیٰطِیْنُ فِی الْاَرْضِ حَیْرَانَ ۪ لَہٗۤ اَصْحٰبٌ یَّدْعُوْنَہٗۤ اِلَی الْهُدَی ائْتِنَا ؕ قُلْ اِنَّ هُدَی اللّٰهِ هُوَ الْهُدٰی ؕ وَ اُمِرْنَا لِنُسْلِمَ لِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَ ۝

“আপনি বলে দিন: আমরা কি আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকবো, যে আমাদের উপকার করতে পারে না এবং ক্ষতিও করতে পারে না; এবং আল্লাহ আমাদেরকে যে পথ প্রদর্শন করেছেন তা বাদ দিয়ে আমরা কি উল্টো পথে ফিরে যাব – ওই ব্যক্তির মত, যাকে শয়তানেরা যমীনে বিপথগামী করে দিয়েছে – সে উদভ্রান্ত হয়ে ঘোরাফেরা করছে। তার সহচররা তাকে সঠিক পথের দিকে ডেকে বলছে: আস, আমাদের কাছে। আপনি বলে দিন : নিশ্চয় আল্লাহর পথই সুপথ। আমরা আদিষ্ট হয়েছি যাতে জগতসমূহের পালনকর্তার আজ্ঞাবহ হয়ে যাই।” (৬:৭১)

وَاَنَّ هٰذَا صِرٰطِىْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُ وَلَا تَتَّبِعُوْا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِه ذٰلِكُمْ وَصّٰىكُمْ بِه لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ۝

“নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ। অতএব, এ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তা হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সংযত হও।” (৬:১৫৩)

فَرِيْقًا هَدٰى وَفَرِيْقًا حَقَّ عَلَيْهِمُ الضَّلٰلَةُ اِنَّهُمُ اتَّخَذُوْا الشَّيٰطِيْنَ اَوْلِيَآءَ مِنْ دُوْنِ اللهِ وَيَحْسَبُوْنَ اَنَّهُمْ مُّهْتَدُوْنَ۝

“(আল্লাহ) একদলকে পথ-প্রদর্শন করেছেন এবং একদলের জন্যে পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং ধারণা করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।” (৭:৩০)।”

وَ مَا مَنَعَ النَّاسَ اَنْ یُّؤْمِنُوْۤا اِذْ جَآءَهُمُ الْهُدٰی وَ یَسْتَغْفِرُوْا رَبَّهُمْ اِلَّاۤ اَنْ تَاْتِیَهُمْ سُنَّۃُ الْاَوَّلِیْنَ اَوْ یَاْتِیَهُمُ الْعَذَابُ قُبُلًا ۝

“হেদায়েত আসার পর বিশ্বাস স্থাপন করতে এবং তাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে কোন বিষয়টি মানুষকে বিরত রাখছে, তারা (সম্ভবত) অপেক্ষা করছে কখন আসবে তাদের কাছে পূর্ববর্তীদের রীতি–নীতি অথবা কখন আসবে (আমার) আযাব তাদের সম্মুখে।” (১৮:৫৫)

وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِـَٔايٰتِ رَبِّه فَاَعْرَضَ عَنْهَا وَنَسِىَ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ اِنَّا جَعَلْنَا عَلٰى قُلُوْبِهِمْ اَكِنَّةً اَنْ يَّفْقَهُوْهُ وَفِىْۤ اٰذَانِهِمْ وَقْرًا وَاِنْ تَدْعُهُمْ اِلَى الْهُدٰى فَلَنْ يَّهْتَدُوْۤا اِذًا اَبَدًا۝

“তার চাইতে অধিক জালেম কে, যাকে তার পালনকর্তার কালাম দ্বারা বোঝানো হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার পূর্ববর্তী কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায়? আমি তাদের অন্তরের উপর পর্দা রেখে দিয়েছি, যেন তা না বোঝে এবং তাদের কানে রয়েছে বধিরতার বোঝা। যদি আপনি তাদেরকে সৎপথের প্রতি দাওয়াত দেন, তবে কখনই তারা সৎপথে আসবে না।” (১৮:৫৭)

وَمَا كَانَ اللهُ لِيُضِلَّ قَوْمًۢا بَعْدَ اِذْ هَدٰىهُمْ حَتّٰى يُبَيِّنَ لَهُمْ مَّا يَتَّقُوْنَ اِنَّ اللهَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌ۝

“আর আল্লাহ কোন জাতিকে হেদায়েত করার পর পথভ্রষ্ট করেন না যতক্ষণ না তাদের জন্য পরিষ্কারভাবে বলে দেন সেসব বিষয় যা থেকে তাদের বেঁচে থাকা দরকার। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব বিষয়ে ওয়াকেফহাল।” (৯:১১৫)

وَاللهُ يَدْعُوْۤا اِلٰى دَارِ السَّلٰمِ وَيَهْدِى مَنْ يَّشَآءُ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝ لِّلَّذِيْنَ اَحْسَنُوْا الْحُسْنٰى وَزِيَادَةٌ وَلَا يَرْهَقُ وُجُوْهَهُمْ قَتَرٌ وَّلَا ذِلَّةٌ فَاُوْلٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيْهَا خٰلِدُوْنَ۝

“আর আল্লাহ শান্তি–নিরাপত্তার আলয়ের প্রতি আহ্বান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথ প্রদর্শন করেন। যারা সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও চেয়ে বেশী। আর তাদের মুখমন্ডলকে আবৃত করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই হল জান্নাতবাসী, এতেই তারা বসবাস করতে থাকবে অনন্তকাল।” (১০:২৫ – ২৬)

وَعَلَى اللهِ قَصْدُ السَّبِيْلِ وَمِنْهَا جَاۤئِرٌ وَّلَوْ شَآءَ لَهَدٰىكُمْ اَجْمَعِيْنَ۝

“সরল পথ আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে এবং পথগুলোর মধ্যে কিছু বক্র পথও রয়েছে। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন।” (১৬:৯)

قُلْ مَنْ يَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ اَمَّنْ يَّمْلِكُ السَّمْعَ وَالْاَبْصٰرَ وَمَنْ يُّخْرِجُ الْحَىَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَىِّ وَمَنْ يُّدَبِّرُ الْاَمْرَ فَسَيَقُوْلُوْنَ اللهُ فَقُلْ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ۝ فَذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمُ الْحَقُّ ط فَمَاذَا بَعْدَ الْحَقِّ اِلَّا الضَّلٰلُ ط فَاَنّٰى تُصْرَفُوْنَ۝ كَذٰلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِيْنَ فَسَقُوْٓا اَنَّهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ۝ قُلْ هَلْ مِنْ شُرَكَآئِكُمْ مَّنْ يَّبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه قُلِ اللهُ يَبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه فَاَنّٰى تُؤْفَكُوْنَ۝

“তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ! তখন তুমি বলো তারপরেও ভয় করছ না? অতএব, এ আল্লাহই তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা। আর সত্য প্রকাশের পরে (উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরার মাঝে) কি রয়েছে গোমরাহী ছাড়া? সুতরাং কোথায় ঘুরছ? এমনিভাবে সপ্রমাণিত হয়ে গেছে তোমার পরওয়ারদেগারের বাণী সেসব নাফরমানের ব্যাপারে যে, এরা ঈমান আনবে না। বল, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মাঝে যে সৃষ্টি কে পয়দা করতে পারে এবং আবার জীবিত করতে পারে? বল, আল্লাহই প্রথমবার সৃষ্টি করেন এবং অতঃপর তার পুনরুদ্ভব করবেন। অতএব, কোথায় ঘুরপাক খাচ্ছে?” (১০:৩১ – ৩৪)

قُلْ هَلْ مِنْ شُرَكَآئِكُمْ مَّنْ يَّهْدِىْۤ اِلَى الْحَقِّ قُلِ اللهُ يَهْدِىْ لِلْحَقِّ اَفَمَنْ يَّهْدِىۤ اِلَى الْحَقِّ اَحَقُّ اَنْ يُتَّبَعَ اَمَّنْ لَّا يَهِدِّىۤ اِلَّاۤ اَنْ يُّهْدٰى فَمَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُوْنَ۝ وَمَا يَتَّبِعُ اَكْثَرُهُمْ اِلَّا ظَنًّا ط اِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِىْ مِنَ الْحَقِّ شَيْـًٔا ط اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌۢ بِمَا يَفْعَلُوْنَ۝

“জিজ্ঞেস করুন, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মধ্যে যে সত্য–সঠিক পথ প্রদর্শন করবে? বলুন, আল্লাহই সত্য–সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, সুতরাং এমন যে লোক সঠিক পথ দেখাবে তার কথা মান্য করা কিংবা যে লোক নিজে নিজে পথ খুঁজে পায় না, তাকে পথ দেখানো কর্তব্য। অতএব, তোমাদের কি হল, কেমন তোমাদের বিচার? বস্তুত তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে।” (১০:৩৫ – ৩৬)

كَيْفَ يَهْدِى اللهُ قَوْمًا كَفَرُوْا بَعْدَ اِيْمٰنِهِمْ وَشَهِدُوْۤا اَنَّ الرَّسُوْلَ حَقٌّ وَجَآءَهُمُ الْبَيِّنٰتُ وَاللهُ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ۝

“কেমন করে আল্লাহ এমন জাতিকে হেদায়েত দান করবেন, যারা ঈমান আনার পর এবং রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্য দেয়ার পর এবং তাদের নিকট প্রমাণ এসে যাওয়ার পর কাফের হয়েছে। আর আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে হেদায়েত দান করেন না।” (৩:৮৬)

اُوْلٰٓئِكَ الَّذِيْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى فَمَا رَبِحَتْ تِّجٰرَتُهُمْ وَمَا كَانُوْا مُهْتَدِيْنَ۝

“তারা সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী খরিদ করে। বস্তুত তারা তাদের এ ব্যবসায় লাভবান হতে পারেনি এবং তারা হেদায়েতও লাভ করতে পারেনি।” (২:১৬)

فَاُوْلٰٓئِكَ الَّذِيْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ فَمَاۤ اَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ۝

“এরাই হল সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহী খরিদ করেছে এবং (খরিদ করেছে) ক্ষমা ও অনুগ্রহের বিনিময়ে আযাব। অতএব, তারা দোযখের উপর কেমন ধৈর্য্য ধারণকারী।” (২:১৭৫)

وَاِنَّكَ لَتَدْعُوْهُمْ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝ وَاِنَّ الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ عَنِ الصِّرٰطِ لَنٰكِبُوْنَ۝ وَلَوْ رَحِمْنٰهُمْ وَكَشَفْنَا مَا بِهِمْ مِّنْ ضُرٍّ لَّلَجُّوْا فِى طُغْيٰنِهِمْ يَعْمَهُوْنَ۝

“আপনি তো তাদেরকে সোজা পথে দাওয়াত দিচ্ছেন; আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তারা সোজা পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। যদি আমি তাদের প্রতি দয়া করি এবং তাদের কষ্ট দূর করে দেই, তবুও তারা তাদের অবাধ্যতায় দিশেহারা হয়ে লেগে থাকবে।” (২৩:৭৩ – ৭৫)

اَفَمَنْ زُيِّنَ لَه سُوْۤءُ عَمَلِه فَرَاٰهُ حَسَنًا فَاِنَّ اللهَ يُضِلُّ مَنْ يَّشَآءُ وَيَهْدِىْ مَنْ يَّشَآءُ فَلَا تَذْهَبْ نَفْسُكَ عَلَيْهِمْ حَسَرٰتٍ ط اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌۢ بِمَا يَصْنَعُوْنَ۝

“যাকে মন্দকর্ম শোভনীয় করে দেখানো হয়, সে তাকে উত্তম মনে করে, সে কি সমান যে মন্দকে মন্দ মনে করে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচছা সৎপথ প্রদর্শন করেন। সুতরাং আপনি তাদের জন্যে অনুতাপ করে নিজেকে ধ্বংস করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন তারা যা করে।” (৩৫:৮)

وَلَوْ شَآءَ اللهُ لَجَعَلَكُمْ اُمَّةً وَّاحِدَةً وَّلٰكِنْ يُّضِلُّ مَنْ يَّشَآءُ وَيَهْدِىْ مَنْ يَّشَآءُ وَلَتُسْـَٔلُنَّ عَمَّا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ۝

“আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে এক জাতি করে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে।” (১৬:৯৩)

لَّقَدْ اَنْزَلْنَاۤ اٰيٰتٍ مُّبَيِّنٰتٍ وَاللهُ يَهْدِىْ مَنْ يَّشَآءُ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝

“আমি তো সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করেছি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালনা করেন ।” (২৪:৪৬)

اِنَّمَا يَعْمُرُ مَسٰجِدَ اللهِ مَنْ اٰمَنْ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَاَقَامَ الصَّلَوٰةَ وَاٰتَى الزَّكَوٰةَ وَلَمْ يَخْشَ اِلَّا اللهَ فَعَسٰىۤ ط اُوْلٰٓئِكَ انْ يَّكُوْنُوْا مِنَ الْمُهْتَدِيْنَ۝

“নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি এবং কায়েম করেছে নামায ও আদায় করে যাকাত; আল্লাহ ব্যতীত আর কাউকে ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা হেদায়েতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (৯:১৮)

وَلِيْعْلَمَ الَّذِيْنَ اُوْتُوْا الْعِلْمَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَيُؤْمِنُوْا بِه فَتُخْبِتَ لَه قُلُوْبُهُمْ ۗ وَاِنَّ اللهَ لَهَادِ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْٓا اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝

“এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য; অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহই বিশ্বাসস্থাপনকারীকে সরল পথ প্রদর্শন করেন।” (২২:৫৪)

فَاَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّيْنِ حَنِيْفًا فِطْرَتَ اللهِ الَّتِىْ فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا ط لَا تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللهِ ذٰلِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُوْنَ۝

“…….তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।” (৩০: ৩০)

وَيَزِيْدُ اللهُ الَّذِيْنَ اهْتَدَوْا هُدًى ۗ وَالْبٰقِيٰتُ الصّٰلِحٰتُ خَيْرٌ عِنْدَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَّخَيْرٌ مَّرَدًّا۝

“যারা সৎপথে চলে আল্লাহ তাদের পথপ্রাপ্তি বৃদ্ধি করেন এবং স্থায়ী সৎকর্মসমূহ তোমার পালনকর্তার কাছে সওয়াবের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসেবেও শ্রেষ্ঠ।” (১৯:৭৬)

وَمَنْ يَهْدِ اللهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَنْ تَجِدَ لَهُمْ اَوْلِيَآءَ مِنْ دُوْنِه ۝

“আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, সেই তো সঠিক পথপ্রাপ্ত এবং যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাদের জন্যে আপনি আল্লাহ ছাড়া কোন সাহায্যকারী পাবেন না…..” (১৭:৯৭)

مَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَلَا هَادِىَ لَه وَيَذَرُهُمْ فِىْ طُغْيٰنِهِمْ يَعْمَهُوْنَ۝

“আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন। তার কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে মত্ত অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে রাখেন।” (৭:১৮৬)

اِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتّٰى۝ فَاَمَّا مَنْ اَعْطٰى وَاتَّقٰى۝ وَصَدَّقَ بِالْحُسْنٰى۝ فَسَنُيَسِّرُه لِلْيُسْرٰى۝ وَاَمَّا مَنْ ۢ بَخِلَ وَاسْتَغْنٰى۝ وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى۝ فَسَنُيَسِّرُه لِلْعُسْرٰى۝ وَمَا يُغْنِىْ عَنْهُ مَالُه اِذَا تَرَدّٰىۤ۝ اِنَّ عَلَيْنَا لَلْهُدٰى۝ وَاِنَّ لَنَا لَلْاٰخِرَةَ وَالْاُوْلٰى۝

“নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের। অতএব, যে দান করে এবং খোদাভীরু হয়, এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে, আমি তার জন্যে অনুগ্রহ লাভের পথটিকে মসৃণ করে দেব। আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, আমি তার জন্য দুর্ভোগের পথটিকে সহজ করে করব। যখন সে অধঃপতিত হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না। আমার দায়িত্ব পথ প্রদর্শন করা। আর আমি মালিক ইহকালের ও পরকালের।” (৯২:৪ – ১৩)

 

হেদায়েতের প্রার্থনা-বাণী

হেদায়েত প্রাপ্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কিভাবে প্রার্থনা জানাতে হবে তা আল্লাহপাক নিম্নোক্ত আয়াতসমুহে শিক্ষা দিয়েছেন:

اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَاِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ۝ اِهْدِنَا الصِّرٰطَ الْمُسْتَقِيْمَ۝ صِرٰطَ الَّذِيْنَ اَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ ۝ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ۝

“আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর, সে সব লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গযব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়েছে।” (১: ৫ – ৭)

رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَیْتَنَا وَ هَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَۃً ۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَابُ۝

“হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা।” (৩:৮)

 

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মনোনীত দ্বীন–ইসলাম

شَرَعَ لَكُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا وَصّٰى بِه نُوْحًا وَالَّذِىۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِه اِبْرٰهِيْمَ وَمُوْسٰى وَعِيْسٰۤى اَنْ اَقِيْمُوْا الدِّيْنَ وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ ۝

“তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নির্ধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না…।” (৪২:১৩)

মানব সৃষ্টির সূচনা থেকেই আল্লাহ্ মনোনীত দ্বীন হিসেবে ইসলামের অভিযাত্রা শুরু। মানবজাতিকে সুপথ প্রদর্শনের জন্য দুনিয়ার বুকে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন তাঁর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। সব নবী ও রাসূলের দ্বীন ছিল এক – যদিও যুগের প্রেক্ষাপটে ও সময়ের প্রয়োজনে তাদের শরীয়ত ছিল ভিন্ন ভিন্ন। এ সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, “(মূলতঃ) আপনাদের (রাসূলগণের) এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন।” (২৩:৫২)।  কালের আবর্তনে যুগে যুগে নবী–রাসূলগণ তৌহিদের দাওয়াত ও শরীয়তী বিধান নিয়ে তাঁদের সম্প্রদায়ের জন্য আবির্ভূত হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা) ইসলাম ধর্ম নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। মহান আল্লাহ্ তায়ালা ইসলামকে বিশ্ববাসীর জন্য তাঁর মনোনীত দ্বীন ও একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আখেরী যামানার মানুষের জন্য ইসলাম ধর্মের মধ্যেই নিহিত রেখেছেন সর্বোত্তম কল্যাণ, রহমত, বরকত ও সাফল্য।

ইসলাম শব্দের অর্থ দু’টি – আত্মসমর্পণ ও শান্তি। আর ইসলামী পরিভাষায় এ দু’টি অর্থের মর্মার্থ হলো:  এক ও অদ্বিতীয় উপাস্য আল্লাহর নিকট পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ এবং তাঁর প্রেরিত বিধানসমূহ মেনে চলার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি অর্জন। তাই ইসলাম শান্তির ধর্ম নামে পরিচিত। যারা সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করে ইসলামের বিধানসমূহের প্রতি আনুগত্যশীল হয়েছে তাদের পরিচয় হলো মুসলমান।

আল্লাহ্ সুহবানাহু ওয়া তায়ালার মনোনীত দ্বীন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর পরিচয় সম্পর্কিত আয়াতগুলো নীচে পেশ করা হলো:

الْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِىْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْاِسْلٰمَ دِيْنًا…۝……

“……..আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম…।” (৫:৩)

….اِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْاِسْلمُ

“নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম…।” (৩:১৯)

يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُمُ الرَّسُوْلُ بِالْحَقِّ مِنْ رَّبِّكُمْ فَـَٔامِنُوْا خَيْرًا لَّكُمْ وَاِنْ تَكْفُرُوْا فَاِنَّ لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَكَانَ اللهُ عَلِيْمًا حَكِيْمًا۝

“হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী নিয়ে তোমাদের নিকট রাসূল এসেছেন, তোমরা তা মেনে নাও যাতে তোমরা সর্বোত্তম কল্যাণ লাভ করতে পার। আর যদি তোমরা তা না মান, জেনে রাখ আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সে সবকিছুই আল্লাহর। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্বজ্ঞ, প্রাজ্ঞ।” (৪:১৭০)

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِى نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللهِ وَاللهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ۝ يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا ادْخُلُوْا فِى السِّلْمِ كَآفَّةً وَّلَا تَتَّبِعُوْا خُطُوْٰتِ الشَّيْطٰنِ اِنَّه لَكُمْ عَدُوْ مُّبِيْنٌ۝ فَاِنْ زَلَلْتُمْ مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْكُمُ الْبَيِّنٰتُ فَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ عَزِيْزٌ حَكِيْمٌ۝

“আর মানুষের মাঝে এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জানের বাজি রাখে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। হে ঈমানদারগন! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। অতঃপর তোমাদের মাঝে পরিস্কার নির্দেশ এসে গেছে বলে জানার পরেও যদি তোমরা পদস্খলিত হও, তাহলে নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ, পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।” (২:২০৭ – ২০৯)

اَفَغَيْرَ دِيْنِ اللهِ يَبْغُوْنَ وَلَه اَسْلَمَ مَنْ فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ طَوْعًا وَّكَرْهًا وَّاِلَيْهِ يُرْجَعُوْنَ۝

“তারা (অবিশ্বাসীগণ) কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাঁর দিকেই তারা ফিরে যাবে।” (৩:৮৩)

وَ مَاۤ اُمِرُوْۤا اِلَّا لِیَعْبُدُوا اللّٰهَ مُخْلِصِیْنَ لَهُ الدِّیْنَ ۬ۙ حُنَفَآءَ وَ یُقِیْمُوا الصَّلٰوۃَ وَ یُؤْتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ذٰلِكَ دِیْنُ الْقَیِّمَۃِ ۝

“তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামায কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম।” (৯৮:৫)

قُلْ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا وَ مَاۤ اُنْزِلَ عَلٰۤی اِبْرٰهِیْمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ الْاَسْبَاطِ وَ مَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰی وَ عِیْسٰی وَ النَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۪ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ وَ نَحْنُ لَہٗ مُسْلِمُوْنَ ۝

“বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী–রাসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই আত্মসমর্পণকারী মুসলমান।” (৩:৮৪)

وَمَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلٰمِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوْ فِى الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ۝

“যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।” (৩:৮৫)

يٰۤايُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا اتَّقُوْا اللهَ حَقَّ تُقَاتِه وَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُم مُّسْلِمُوْنَ۝

“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।” (৩:১০২)

وَاعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِيْعًا وَّلَا تَفَرَّقُوْا وَاذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللهِ عَلَيْكُمْ اِذْ كُنْتُمْ اَعْدَاۤءً فَاَلَّفَ بَيْنَ قُلُوْبِكُمْ فَاَصْبَحْتُم بِنِعْمَتِه اِخْوٰنًا وَكُنْتُمْ عَلٰى شَفَا حُفْرَةٍ مِّنَ النَّارِ فَاَنْقَذَكُمْ مِّنْهَاط كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰيٰتِه لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ۝

“আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।” (৩:১০৩)

قُلْ اِنَّ صَلَاتِىْ وَنُسُكِىْ وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِىْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ۝ لَا شَرِيْكَ لَه وَبِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَاَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ۝

“(হে নবী) আপনি বলুন: আমার নামায, আমার কুরবাণী এবং আমার জীবন ও মরন বিশ্ব–প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল (মুসলমান)।” (৬:১৬২ – ১৬৩)

وَلْتَكُن مِّنكُمْ اُمَّةٌ يَّدْعُوْنَ اِلَى الْخَيْرِ وَيَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاُوْلٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ۝

“আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহ্বান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।” (৩:১০৪)

كُنْتُمْ خَيْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ ۗ وَلَوْ اٰمَنْ اَهْلُ الْكِتٰبِ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُم مِّنْهُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ وَاَكْثَرُهُمُ الْفٰسِقُوْنَ۝

“তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে–কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী।” (৩:১১০)

فَمَنْ يُّرِدِ اللهُ اَنْ يَّهْدِيَه يَشْرَحْ صَدْرَه لِلْاِسْلٰمِ وَمَنْ يُّرِدْ اَنْ يُّضِلَّه يَجْعَلْ صَدْرَه ضَيِّقًا حَرَجًا كَاَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِى السَّمَآءِ كَذٰلِكَ يَجْعَلُ اللهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَايُؤْمِنُوْنَ۝

“অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তা বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে বিপথগামী করতে চান, তার বক্ষকে অত্যধিক সংকীর্ণ করে দেন – যেন তা আকাশে চড়ার মতই দুঃসাধ্যপূর্ণ। এমনি ভাবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। আল্লাহ তাদের উপর আযাব বর্ষণ করেন।” (৬:১২৫)

وَهٰذَا صِرٰطُ رَبِّكَ مُسْتَقِيْمًا قَدْ فَصَّلْنَا الْاٰيٰتِ لِقَوْمٍ يَذَّكَّرُوْنَ۝ لَهُمْ دَارُ السَّلٰمِ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَهُوَ وَلِيُّهُمْ بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ۝

“আর এটাই (ইসলামই) হলো আপনার পালনকর্তার সরল পথ। আমি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্যে আয়াতসমূহ বিস্তুারিতভাবে বর্ণনা করেছি। তাদের জন্যেই তাদের প্রতিপালকের কাছে নিরাপত্তার গৃহ রয়েছে এবং তিনি তাদের বন্ধু তাদের কর্মের কারণে।” (৬:১২৬ – ১২৭)।

هُوَ الَّذِىۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَه بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيْظْهِرَه عَلَى الدِّيْنِ كُلِّه وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ۝

“তিনিই প্রেরণ করেছেন আপন রাসূলকে হেদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে, যেন এ দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন, যদিও মুশরেকরা তা অপ্রীতিকর মনে করে।” (৯:৩৩)

ثُمَّ جَعَلْنٰكَ عَلٰى شَرِيْعَةٍ مِّنَ الْاَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ اَهْوَآءَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ۝

“এরপর আমি আপনাকে রেখেছি দ্বীনের এক বিশেষ শরীয়তের উপর। অতএব, আপনি এর অনুসরণ করুন এবং অজ্ঞানদের খেয়াল খুশীর অনুরসণ করবেন না।” (৪৫:১৮)

وَهُوَ اللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ لَهُ الْحَمْدُ فِى الْاُوْلٰى وَالْاٰخِرَةِ وَلَهُ الْحُكْمُ وَاِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ۝

“তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ইহকাল ও পরকালে তাঁরই প্রশংসা। বিধান তাঁরই ক্ষমতাধীন এবং তোমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।” (২৮:৭০)

اَفَمَنْ شَرَحَ اللّٰهُ صَدْرَہٗ لِلْاِسْلَامِ فَهُوَ عَلٰی نُوْرٍ مِّنْ رَّبِّہٖ ؕ فَوَیْلٌ لِّلْقٰسِیَۃِ قُلُوْبُهُمْ مِّنْ ذِکْرِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓئِكَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ ۝

“আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দুর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে রয়েছে।” (৩৯:২২)

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا ادْخُلُوْا فِى السِّلْمِ كَآفَّةً وَّلَا تَتَّبِعُوْا خُطُوْٰتِ الشَّيْطٰنِ اِنَّه لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ۝

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত রূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (২:২০৮)

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ تُطِيْعُوْا فَرِيْقًا مِّنَ الَّذِيْنَ اُوْتُوْا الْكِتٰبَ يَرُدُّوْكُمْ بَعْدَ اِيْمٰنِكُمْ كٰفِرِيْنَ۝ وَكَيْفَ تَكْفُرُوْنَ وَاَنْتُمْ تُتْلٰى عَلَيْكُمْ اٰيٰتُ اللهِ وَفِيْكُمْ رَسُوْلُه ط وَمَنْ يَّعْتَصِمْ بِاللهِ فَقَدْ هُدِىَ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবদের কোন ফেরকার কথা মান, তাহলে ঈমান আনার পর তারা তোমাদিগকে কাফেরে পরিণত করে দেবে। আর তোমরা কেমন করে কাফের হতে পার, অথচ তোমাদের সামনে পাঠ করা হয় আল্লাহর আয়াতসমূহ এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল। আর যারা আল্লাহর কথা দৃঢ়ভাবে ধরবে, তারা হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে সরল পথের।” (৩:১০০ – ১০১) ।”

قُلْ یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ اِنْ کُنْتُمْ فِیْ شَکٍّ مِّنْ دِیْنِیْ فَلَاۤ اَعْبُدُ الَّذِیْنَ تَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَ لٰكِنْ اَعْبُدُ اللّٰهَ الَّذِیْ یَتَوَفّٰىکُمْۚۖ وَ اُمِرْتُ اَنْ اَکُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ ۝ وَاَنْ اَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّیْنِ حَنِیْفًا ۚ وَلَا تَکُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ۝

“(হে নবী) বলুন – হে মানবকুল, তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে থাক, তবে (জেনো) আমি তাদের এবাদত করি না যাদের এবাদত তোমরা কর আল্লাহ ব্যতীত। কিন্তু আমি এবাদত করি আল্লাহর, যিনি তুলে নেন তোমাদেরকে। আর আমার প্রতি নির্দেশ হয়েছে যাতে আমি ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত থাকি। আর যেন সোজা দ্বীনের প্রতি মুখ করি সরল হয়ে এবং যেন মুশরেকদের অন্তর্ভুক্ত না হই।” (১০:১০৪ –  ১০৫)।

بَلٰى مَنْ اَسْلَمَ وَجْهَه لِلّٰهِ وَهُوْ مُحْسِنٌ فَلَه اَجْرُه عِنْدَ رَبِّه وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ۝

“হ্যাঁ, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য তার পালনকর্তার কাছে পুরস্কার বয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।” (২:১১২)

اَلَيْسَ اللهُ بِكَافٍ عَبْدَه وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِه وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَمَا لَه مِنْ هَادٍ۝ وَّمَنْ يَّهْدِ اللهُ فَمَا لَه مِنْ مُّضِلٍّ اَلَيْسَ اللهُ بِعَزِيْزٍ ذِى انْتِقَامٍ۝

“আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন? অথচ তারা আপনাকে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যান্য উপাস্যদের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ যাকে পথপ্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্টকারী কেউ নেই। আল্লাহ কি পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী নন?” (৩৯:৩৬ – ৩৭)

وَمَنْ يُّسْلِمْ وَجْهَه اِلَى اللهِ وَهُوْ مُحْسِنٌ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰى ط وَاِلَى اللهِ عٰقِبَةُ الْاُمُوْرِ۝

“যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের চূড়ান্ত পরিণাম আল্লাহর দিকে।” (৩১:২২)

قُلْ اِنِّىۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ اللهَ مُخْلِصًا لَّهُ الدِّيْنَ۝ وَاُمِرْتُ لِاَنْ اَكُوْنَ اَوَّلَ الْمُسْلِمِيْنَ۝

“(হে নবী) বলুন, আমি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি। আরও আদিষ্ট হয়েছি, সর্বপ্রথম আত্মসমর্পণকারী হওয়ার জন্যে।” (৩৯:১১ – ১২)

وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَنِ افْتَرٰى عَلَى اللهِ الْكَذِبَ وَهُوَ يُدْعٰىۤ اِلَى الْاِسْلٰمِ وَاللهُ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ۝ يُرِيْدُوْنَ لِيْطْفِـُٔوْا نُوْرَ اللهِ بِاَفْوٰهِهِمْ وَاللهُ مُتِمُّ نُوْرِه وَلَوْ كَرِهَ الْكٰفِرُوْنَ۝ هُوَ الَّذِىۤ اَرْسَلَ رَسُوْلَه بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيْظْهِرَه عَلَى الدِّيْنِ كُلِّه وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُوْنَ۝

“যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। তারা মুখের ফুৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। তিনি তাঁর রাসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সবধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরেকরা তা অপছন্দ করে।” (৬১:৭ – ৯)

وَجَاهِدُوْا فِى اللهِ حَقَّ جِهَادِه هُوَ اجْتَبٰىكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِى الدِّيْنِ مِنْ حَرَجٍ مِّلَّةَ اَبِيْكُمْ اِبْرٰهِيْمَ هُوَ سَمّٰىكُمُ الْمُسْلِمِيْنَ مِنْ قَبْلُ وَفِىْ هٰذَا لِيْكُوْنَ الرَّسُوْلُ شَهِيْدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَى النَّاسِ فَاَقِيْمُوْا الصَّلَوٰةَ وَاٰتُوْا الزَّكَوٰةَ وَاعْتَصِمُوْا بِاللهِ هُوَ مَوْلٰىكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلٰى وَنِعْمَ النَّصِيْرُ۝

“তোমরা আল্লাহর জন্যে সংগ্রাম কর যেভাবে সংগ্রাম করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন এবং ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কঠিন কোন বিধান রাখেননি। এ ধর্ম তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মের অনুরূপ। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কুরআনেও, যাতে রাসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে। সুতরাং তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে শক্তভাবে ধারণ কর। তিনিই তোমাদের মালিক। অতএব তিনি কত উত্তম মালিক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।” (২২:৭৮)

قُلْ اِنَّنِىْ هَدٰىنِىْ رَبِّىۤ اِلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ دِيْنًا قِيْمًا مِّلَّةَ اِبْرٰهِيْمَ حَنِيْفًا وَّمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ۝

“আপনি বলে দিন: আমার প্রতিপালক আমাকে প্রদর্শন করেছেন সরল পথ – একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীমের প্রতিষ্ঠিত বিশুদ্ধ দ্বীন। তিনি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।” (৬:১৬১)

وَالَّذِيْنَ اجْتَنَبُوْا الطّٰغُوْتَ اَنْ يَّعْبُدُوْهَا وَاَنَابُوْۤا اِلَى اللهِ لَهُمُ الْبُشْرٰى فَبَشِّرْ عِبَادِ۝ الَّذِيْنَ يَسْتَمِعُوْنَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُوْنَ اَحْسَنَه فَاُوْلٰٓئِكَ الَّذِيْنَ هَدٰىهُمُ اللهُ وَاُوْلٰٓئِكَ هُمْ اُوْلُوْا الْاَلْبَابِ۝

“যারা শয়তানী শক্তির পূজা–অর্চনা থেকে দূরে থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ দিন আমার বান্দাদেরকে- যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।” (৩৯:১৭ – ১৮)

اَللهُ نَزَّلَ اَحْسَنَ الْحَدِيْثِ كِتٰبًا مُّتَشٰبِهًا مَّثَانِىَ تَقْشَعِرُّ مِنْهُ جُلُوْدُ الَّذِيْنَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ ثُمَّ تَلِيْنُ جُلُوْدُهُمْ وَقُلُوْبُهُمْ اِلٰى ذِكْرِ اللهِ ذٰلِكَ هُدَى اللهِ يَهْدِىْ بِه مَنْ يَّشَآءُ وَمَنْ يُّضْلِلِ اللهُ فَمَا لَه مِنْ هَادٍ۝

“আল্লাহ উত্তম বাণী তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পুনঃ পুনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ, এর মাধ্যমে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।” (৩৯:২৩)

فَاسْتَمْسِكْ بِالَّذِىۤ اُوْحِىَ اِلَيْكَ اِنَّكَ عَلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝ وَاِنَّه لَذِكْرٌ لَّكَ وَلِقَوْمِكَ وَسَوْفَ تُسْـَٔلُوْنَ۝

“অতএব, আপনার প্রতি যে ওহী নাযিল করা হয়, তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করুন। নিঃসন্দেহে আপনি সরল পথে রয়েছেন। এটা আপনার ও আপনার সম্প্রদায়ের জন্যে উপদেশ বাণী এবং শীঘ্রই আপনারা জিজ্ঞাসিত হবেন।” (৪৩:৪৩ – ৪৪)

 

পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ধর্মীয় সহনশীলতা

وَ لَوْ شَآءَ رَبُّكَ لَاٰمَنَ مَنْ فِی الْاَرْضِ کُلُّهُمْ جَمِیْعًا ؕ اَفَاَنْتَ تُکْرِهُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوْنُوْا مُؤْمِنِیْنَ ۝

“আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসতে সমবেতভাবে। তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তি করবে ঈমান আনার জন্য?।” (১০:৯৯)

মানুষের চিন্তার স্বাধীনতার অপব্যবহার ও শয়তানী প্ররোচনার কারণে দুনিয়ার বুকে ধর্ম নিয়ে দ্বন্দ--সংঘাত, অসহিষ্ণুতা, বাড়াবাড়ি চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় ইসলাম শান্তির ধর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মহান আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন ধর্মীয় সহনশীলতার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ও সংঘাত নিষিদ্ধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত আয়াতসমূহ প্রণিধানযোগ্য:

لَا اِكْرَاهَ فِى الدِّينِ ۝

“ধর্মের ব্যাপারে কোন জোর–জবরদস্তি বা বাধ্য–বাধকতা নেই।” (২:২০৬)

لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ

“তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্যে এবং আমার ধর্ম আমার জন্যে।” (১০৯:৬)

نَّحْنُ اَعْلَمُ بِمَا يَقُوْلُوْنَ وَمَاۤ اَنْتَ عَلَيْهِمْ بِجَبَّارٍ فَذَكِّرْ بِالْقُرْاٰنِ مَنْ يَّخَافُ وَعِيْدِ

“তারা যা বলে, তা আমি সম্যক অবগত আছি। আপনি তাদের উপর জোর–জবরকারী নন। অতএব, যে আমার শাস্তিকে ভয় করে, তাকে কুরআনের মাধ্যমে উপদেশ দান করুন।” (৫০:৪৫)

لَا يَنْهٰىكُمُ اللهُ عَنِ الَّذِيْنَ لَمْ يُقٰتِلُوْكُمْ فِى الدِّيْنِ وَلَمْ يُخْرِجُوْكُمْ مِنْ دِيٰرِكُمْ اَنْ تَبَرُّوْهُمْ وَتُقْسِطُوْۤا اِلَيْهِمْ اِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِيْنَ ۝

“ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন।” (৬০:৮)

فَلِذٰلِكَ فَادْعُ وَاسْتَقِمْ كَمَاۤ اُمِرْتَ وَلَا تَتَّبِعْ اَهْوَاۤءَهُمْ وَقُلْ اٰمَنْتُ بِمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ مِنْ كِتٰبٍ وَاُمِرْتُ لِاَعْدِلَ بَيْنَكُمُ اللهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ لَنَاۤ اَعْمٰلُنَا وَلَكُمْ اَعْمٰلُكُمْ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ اللهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَا وَاِلَيْهِ الْمَصِيْرُ۝ وَالَّذِيْنَ يُحَآجُّوْنَ فِى اللهِ مِنْۢ بَعْدِ مَا اسْتُجِيْبَ لَه حُجَّتُهُمْ دَاحِضَةٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ وَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ وَّلَهُمْ عَذَابٌ شَدِيْدٌ۝

“সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুম অনুযায়ী অবিচল থাকুন; আপনি তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করবেন না। বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ হবে। আল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিল, তাদের প্রতি আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর আযাব।” (৪২:১৫ – ১৬)।

وَمَا يَسْتَوِى الْاَعْمٰى وَالْبَصِيْرُ۝ وَلَا الظُّلُمٰتُ وَلَا النُّوْرُ۝ وَلَا الظِّلُّ وَلَا الْحَرُوْرُ۝ وَمَا يَسْتَوِى الْاَحْيَآءُ وَلَا الْاَمْوٰتُ اِنَّ اللهَ يُسْمِعُ مَنْ يَّشَآءُ وَمَآ اَنْتَ بِمُسْمِعٍ مَّنْ فِى الْقُبُوْرِ۝ اِنْ اَنْتَ اِلَّا نَذِيْرٌ۝ اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ بِالْحَقِّ بَشِيْرًا وَنَذِيْرًا وَّاِنْ مِّنْ اُمَّةٍ اِلَّا خَلَا فِيْهَا نَذِيْرٌ۝

“দৃষ্টিমান ও দৃষ্টিহীন সমান নয়। সমান নয় অন্ধকার ও আলো। সমান নয় ছায়া ও তপ্তরোদ। আরও সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ শ্রবণ করান যাকে ইচ্ছা। আপনি কবরে শায়িতদেরকে শুনাতে সক্ষম নন। আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী। আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।” (৩৫:১৯ – ২৪)

وَلَا تَسُبُّوْا الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ فَيَسُبُّوْا اللهَ عَدْوًۢا بِغَيْرِ عِلْمٍۗ كَذٰلِكَ زَيَّنَّا لِكُلِّ اُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ثُمَّ اِلٰى رَبِّهِمْ مَّرْجِعُهُمْ فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ۝

“তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আল্লাহকে ছেড়ে আরাধনা করে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে। এমনিভাবে আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে তাদের কাজ কর্ম সুশোভিত করে দিয়েছি। অতঃপর স্বীয় পালনকর্তার কাছে তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করত।” (৬:১০৮)

لِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلْنَا مَنْسَکًا هُمْ نَاسِکُوْهُ فَلَا یُنَازِعُنَّكَ فِی الْاَمْرِ وَ ادْعُ اِلٰی رَبِّكَ ؕ اِنَّكَ لَعَلٰی هُدًی مُّسْتَقِیْمٍ ۝ وَ اِنْ جٰدَلُوْكَ فَقُلِ اللّٰهُ اَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ۝ اَللّٰهُ یَحْکُمُ بَیْنَکُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَۃِ فِیْمَا کُنْتُمْ فِیْهِ تَخْتَلِفُوْنَ ۝

“আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে এবাদতের একটি নিয়ম–কানুন নির্ধারণ করে দিয়েছি, যা তারা পালন করে। অতএব তারা যেন এ ব্যাপারে আপনার সাথে বিতর্ক না করে। আপনি তাদেরকে পালনকর্তার দিকে আহŸান করুন। নিশ্চয় আপনি সরল পথেই আছেন। তারা যদি আপনার সাথে বিতর্ক করে, তবে বলে দিন, তোমরা যা কর, সে সর্ম্পকে আল্লাহ অধিক জ্ঞাত। তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করছ, আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেই বিষয়ে তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন।” (২২:৬৭ – ৬৯)

لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَآ اِنَّ نَّسِيْنَآ اَوْ اَخْطَاْنَا رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَاۤ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَه عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِه وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ۝

“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভু! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর।” (২:২৮৬)

وَلَا تُجٰدِلُوْۤا اَهْلَ الْكِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِىْ هِىَ اَحْسَنُ اِلَّا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مِنْهُمْ وَقُوْلُوْۤا اٰمَنَّا بِالَّذِىْۤ اُنْزِلَ اِلَيْنَا وَاُنْزِلَ اِلَيْكُمْ وَاِلٰهُنَا وَاِلٰهُكُمْ وَاحِدٌ وَّنَحْنُ لَه مُسْلِمُوْنَ۝

“তোমরা কিতাবধারীদের সাথে তর্ক–বিতর্ক করবে না, কিন্তু উত্তম পন্থায়; তবে তাদের সাথে নয়, যারা তাদের মধ্যে বেইনসাফ। এবং বল, আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে, তাতে আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমাদের উপাস্য ও তোমাদের উপাস্য একই এবং আমরা তাঁরই আজ্ঞাবহ।” (২৯: ৪৬)

فَاِنْ حَآجُّوْكَ فَقُلْ اَسْلَمْتُ وَجْهِىَ لِلّٰهِ وَمَنْ اتَّبَعَنِ وَقُلْ لِّلَّذِيْنَ اُوْتُوْا الْكِتٰبَ وَالْاُمِّيْنَ اٰسْلَمْتُمْ فَاِنْ اَسْلَمُوْا فَقَدِ اهْتَدَوا وَّاِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلٰغُ ط وَاللهُ بَصِيْرٌۢ بِالْعِبَادِ۝

“(হে নবী) যদি তারা আপনার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হয় তবে বলে দিন, ‘আমি এবং আমার অনুসরণকারীগণ আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ করেছি।’ আর আহলে–কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের বলে দিন যে, তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আত্মসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে আপনার দায়িত্ব হলো শুধু (আমার বাণী) পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা।” (৩:২০)

قُلْ مَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ اِلَّا مَنْ شَآءَ اَنْ يَتَّخِذَ اِلٰى رَبِّه سَبِيْلًا۝

“(হে নবী) বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর জন্য (হেদায়েত পৌঁছানোর জন্য) কোন বিনিময় চাই না, তবে এটা চাই যে, প্রত্যেকে স্বেচ্ছায় তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।” (২৫:৫৭)

وَقُلِ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ فَمَنْ شَآءَ فَلْيُؤْمِنْ وَمَنْ شَآءَ فَلْيَكْفُرْ ۝

“বলুন: সত্য তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত। অতএব, যার ইচ্ছা, বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যার ইচ্ছা অমান্য করুক।” (১৮:২৯)

اِنَّا خَلَقْنَا الْاِنْسٰنَ مِنْ نُّطْفَةٍ اَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيْهِ فَجَعَلْنٰهُ سَمِيْعًۢا بَصِيْرًا۝ اِنَّا هَدَيْنٰهُ السَّبِيْلَ اِمَّا شَاكِرًا وَاِمَّا كَفُوْرًا۝

“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হবে, না হয় অকৃতজ্ঞ হবে।” (৭৬:২-৩)

اِنَّ هٰذِه تَذْكِرَةٌ فَمَنْ شَآءَ اتَّخَذَ اِلٰى رَبِّه سَبِيْلًا

“এটা (কুরআন) উপদেশ, অতএব যার ইচ্ছা হয় সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।” (৭৬:২৯)

قُلْ اَتُحَاۤجُّوْنَنَا فِى اللهِ وَهُوْ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ وَلَنَاۤ اَعْمٰلُنَا وَلَكُمْ اَعْمٰلُكُمْ وَنَحْنُ لَه مُخْلِصُوْنَ

“আপনি বলে দিন, তোমরা কি আমাদের সাথে আল্লাহ সম্পর্কে তর্ক করছ? অথচ তিনিই আমাদের পালনকর্তা এবং তোমাদের ও পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। এবং আমরা তাঁরই প্রতি একনিষ্ঠ।” (২:১৩৯)

اِنَّ الَّذِيْنَ فَرَّقُوْا دِيْنَهُمْ وَكَانُوْا شِيْعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِىْ شَىْءٍ اِنَّمَاۤ اَمْرُهُمْ اِلَى اللهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ۝

“নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড–বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তায়ালার এখতিয়ারভুক্ত। অতঃপর তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে।” (৬:১৫৯)

وَاِنَّ هٰذِه اُمَّتُكُمْ اُمَّةً وَّاحِدَةً وَّاَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُوْنِ۝ فَتَقَطَّعُوْۤا اَمْرَهُمْ بَيْنَهُمْ زُبُرًا كُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُوْنَ۝ فَذَرْهُمْ فِىْ غَمْرَتِهِمْ حَتّٰى حِيْنٍ۝

“(মূলতঃ) আপনাদের (রসূলগণের) এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি আপনাদের পালনকর্তা; অতএব আমাকে ভয় করুন। অতঃপর মানুষ তাদের বিষয়কে বহুধা বিভক্ত করে দিয়েছে। প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে আনন্দিত হচ্ছে। অতএব তাদের কিছু কালের জন্যে তাদের অজ্ঞানতায় নিমজ্জিত থাকতে দিন।” (২৩:৫২ – ৫৪)

قُوْلُوْۤا اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْنَا وَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلٰۤی اِبْرٰہٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَ یَعْقُوْبَ وَ الْاَسْبَاطِ وَ مَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰی وَ عِیْسٰی وَ مَاۤ اُوْتِیَ النَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۚ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ۖ وَنَحْنُ لَہٗ مُسْلِمُوْنَ۝

“তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই (আল্লাহর) আনুগত্যকারী।” (২:১৩৬)

قَدْجَآءَكُمْ بَصَآئِرُمِنْ رَّبِّكُمْ فَمَنْ اَبْصَرَ فَلِنَفْسِه وَمَنْ عَمِىَ فَعَلَيْهَا وَمَاۤ اَنَا ۠عَلَيْكُمْ بِحَفِيْظٍ۝

“তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে জ্ঞান–চক্ষু উন্মোচনকারী নিদর্শনাবলী এসে গেছে। অতএব, যে প্রত্যক্ষ করবে, সে নিজেরই উপকার করবে এবং যে অন্ধ হয়ে থাকবে, সে নিজেরই ক্ষতি করবে। (আপনি বলুন) আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই।” (৬:১০৪)

اِتَّبِعْ مَاۤ اُوْحِىَ اِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ وَاَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِيْنَ۝ وَلَوْشَاۤ اَللهُ مَاۤ اَشْرَكُوْا وَمَا جَعَلْنٰكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا وَّمَاۤ اَنْتَ عَلَيْهِمْ بِوَكِيْلٍ۝

“আপনি সেই পথ অনুসরণ করুন, যার আদেশ পালনকর্তার পক্ষ থেকে আসে। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং মুশরেকদের তরফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। যদি আল্লাহ চাইতেন তবে তারা শিরক করত না। আমি আপনাকে তাদের সংরক্ষক করিনি এবং আপনি তাদের কার্যনির্বাহী নন।” (৬:১০৬ – ১০৭)

قُلْ يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدٰى فَاِنَّمَا يَهْتَدِى لِنَفْسِه وَمَنْ ضَلَّ فَاِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَاۤ اَنَا عَلَيْكُمْ بِوَكِيْلٍ۝

“বলে দিন, ‘হে মানবকুল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে। এমন যে কেউ পথে আসে সে পথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্য। আর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই’।” (১০:১০৮)

وَلِكُلٍّ وِجْهَةٌ هُوَ مُوْلِّيْهَا فَاسْتَبِقُوْا الْخَيْرٰتِ اَيْنَ مَا تَكُوْنُوْا يَاْتِ بِكُمُ اللهُ جَمِيْعًا اِنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ۝

“আর সবার জন্যই রয়েছে কিবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (ইবাদত করবে)। কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাশীল।” (২:১৪৮)

قُل لِّلَّذِينَ آمَنُوا يَغْفِرُوا لِلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ أَيَّامَ اللَّهِ لِيَجْزِيَ قَوْمًا بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ

      “মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে, যারা আল্লাহর সে দিনগুলো সম্পর্কে বিশ্বাস রাখে না – যাতে তিনি কোন সম্প্রদায়কে কৃতকর্মের প্রতিফল দেন|” (৪৫:১৪)

 

অধ্যায়সমূহ