এ অধ্যায়ের বিষয়সমূহ
Toggleআল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের পরিচয়, সত্তা ও বৈশিষ্ট্য
قُلْ هُوَ اللهُ اَحَدٌ اَللهُ الصَّمَدُ لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَّه كُفُوًا اَحَدٌ
“(হে নবী) বলুন, তিনিই আল্লাহ্ – একক সত্তা, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” (১১২:১- ৪)।”
এ অনন্ত মহাবিশ্বের অন্তর্গত নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও জগতসমূহের স্রষ্টা, পালনকর্তা, রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং সমগ্র সৃষ্টির নিয়ামক যিনি – তিনি হলেন আল্লাহ্। তিনি আমাদের খালিক, মালিক এবং রব (প্রতিপালক)। তিনি একক, অদ্বিতীয়, চিরঞ্জীব, স্বাধীন ও সার্বভৌম সত্তা এবং অনন্য ও অমুখাপেক্ষি। তিনি তাঁর নিজ সত্তার পরিচয় দিয়ে বলেন:
اَللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ج الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ ج لَا تَاْخُذُه سِنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ ط لَّه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِط مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَه اِلَّا بِاِذْنِه يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ج وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِّنْ عِلْمِه اِلَّا بِمَا شَآءَ ج وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَج وَلَا يَـُٔوْدُه حِفْظُهُمَا ج وَهُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ
“আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, তিনি অনাদি সত্তা। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাতো নয়ই। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর অধীন। কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানভান্ডার থেকে তারা কোন কিছুই আয়ত্ত¡ করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। তাঁর আসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে মোটেই কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।” (২:২৫৫)
سَبَّحَ لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ يُحْىِۦ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ هُوَ الْاَوَّلُ وَالْاٰخِرُ وَالظّٰهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (৫৭:১ – ৩)
هُوَ اللهُ الَّذِىْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ عٰلِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهٰدَةِ هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ هُوَ اللهُ الَّذِىْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلٰمُ الْمُؤْمِنَ المُهَيْمِنَ العَزِيْزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحٰنَ اللهِ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ هُوَ اللهُ الْخٰلِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْاَسْمَآءُ الْحُسْنٰى يُسَبِّحُ لَه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মহিমান্বিত। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র। তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। ননভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়।” (৫৯:২২ – ২৪)
اِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِىْ الَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُه حَثِيْثًا لا وَّالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُوْمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمْرِه ط اَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْاَمْرُ ط تَبَارَكَ اللهُ رَبُّ الْعٰلَمِيْنَ
“নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি দিনকে রাতের উপর আচ্ছাদিত করে দেন যাতে তারা একে অপরকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র – যা তাঁরই আজ্ঞাবহ। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।” (৭:৫৪)
لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ يُحْىِ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম ।” (৫৭:২)
اِنَّ اِلٰهَكُمْ لَوَاحِدٌ رَّبُّ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَرَبُّ الْمَشٰرِقِ اِنَّا زَيَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنْيَا بِزِيْنَةٍ الْكَوَاكِبِ وَحِفْظًا مِّنْ كُلِّ شَيْطٰنٍ مَّارِدٍ
“নিশ্চয় তোমাদের মাবুদ এক। তিনি আসমান সমূহ, যমীনও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর পালনকর্তা এবং পালনকর্তা উদয়াচলসমূহের। নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি। এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে।” (৩৭:৪ – ৭)
لِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا فِيْهِنَّ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এবং এতদুভয়ে অবস্থিত সবকিছুর আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (৫:১২০)
قُلْ لِّمَنْ مَّا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ قُلْ لِلّٰهِ كَتَبَ عَلٰى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ لَيَجْمَعَنَّكُمْ اِلٰى يَوْمِ الْقِيٰمَةِ لَارَيْبَ فِيْهِ الَّذِيْنَ خَسِرُوْۤا اَنْفُسَهُمْ فَهُمْ لَا يُؤْمِنُوْنَ وَلَه مَا سَكَنَ فِى الَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَهُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
“জিজ্ঞেস করুন, নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা আছে, তার মালিক কে? বলে দিন: আল্লাহ। তিনি অনুকম্পা প্রদর্শনকে নিজ দায়িত্বে লিপিবদ্ধ করে নিয়েছেন। তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন। এর আগমনে কোন সন্দেহ নেই। যারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তারাই বিশ্বাস স্থাপন করে না। যা কিছু রাত ও দিনে স্থিতি লাভ করে, তাঁরই। তিনিই শ্রোতা, মহাজ্ঞানী।” (৬:১২ – ১৩)
قُل لِّمَنِ الْاَرْضُ وَمَنْ فِيْهَاۤ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ قُلْ اَفَلَا تَذَكَّرُوْنَ قُلْ مَنْ رَّبُّ السَّمٰوٰتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ قُلْ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ قُلْ مَنْ ۢ بِيْدِه مَلَكُوْتُ كُلِّ شَىْءٍ وَهُوَ يُجِيْرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ قُلْ فَاَنّٰى تُسْحَرُوْنَ بَلْ اَتَيْنٰهُم بِالْحَقِّ وَاِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ مَا اتَّخَذَ اللهُ مِنْ وَّلَدٍ وَّمَا كَانَ مَعَه مِنَ اِلٰهٍ اِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ اِلٰهٍۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ سُبْحٰنَ اللهِ عَمَّا يَصِفُوْنَ عٰلِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهٰدَةِ فَتَعٰلٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
“বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তাদের মালিক কে? যদি তোমরা জান, তবে বল। এখন তারা বলবে: সবই আল্লাহর। বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না? বলুন: সপ্তাকাশ ও মহা–আরশের মালিক কে? এখন তারা বলবে: আল্লাহ। বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না? বলুন: তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুর কর্তৃত্ব, যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ? এখন তারা বলবে: আল্লাহর। বলুন: তাহলে কোথা থেকে তোমাদেরকে মোহগ্রস্ত করা হচ্ছে? কিছুই নয়, আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী। আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা যা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে।” (২৩:৮৪ – ৯২)
তৌহীদ (একত্ববাদ) – আল্লাহ্ তায়ালার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচায়ক
اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الْقَصَصُ الْحَقُّ وَمَا مِنَ اِلٰهٍ اِلَّا اللهُ وَاِنَّ اللهَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“নিঃসন্দেহে এটাই হলো সত্য ভাষণ। আর এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। আর আল্লাহ; তিনিই হলেন পরাক্রমশালী মহাপ্রাজ্ঞ।” (৩:৬২)
لَا اِلهَ اِلَّا اللهُ – এ পবিত্র কলেমাই হলো তৌহীদ। আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি এক-অদ্বিতীয়, অনন্য ও অতুলনীয় সত্তা, তাঁর কোন শরীক নেই এবং নেই কোন সমকক্ষ – এটাই হলো তৌহীদ বা একত্ববাদ। আল্লাহ্ কারো মুখাপেক্ষী নন, অথচ সবাই তাঁর মুখাপেক্ষী। নভোমন্ডলে যা আছে এবং ভূমন্ডলে যা আছে সব কিছুর একচ্ছত্র মালিক তিনি। তিনিই সার্বভৌম শক্তি ও সকল আনুগত্যের অধিকারী এবং সকল প্রশংসার যোগ্য। মানুষ একমাত্র তাঁরই আনুগত্য ও উপাসনা করবে, একমাত্র তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে, তাঁরই ওপর ভরসা করবে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে। এটাই পবিত্র কুরআনে তাওহীদের মর্মবাণী। إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ -অর্থাৎ “আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।” (১:৫)। একত্ববাদের ঘোষিত সাক্ষ্য বাণী হলো: اَﺷْﻬَﺪُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا ﺍللهُ وَحْدَهُ لَا ﺷَﺮِﻳْﻚَ ﻟَﻪ – অর্থাৎ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং তিনি এক – তাঁর কোন শরীক নেই।” এ কলেমার প্রতি একনিষ্ঠ বিশ্বাস প্রতিটি মুসলিম নর–নারীর হৃদয়ে গভীরভাবে গ্রথিত হয়ে গেছে। তাদের এ বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটছে প্রতিদিনের নামাযে ও সেজদায় – যা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত হচ্ছে।
আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা ও এর যৌক্তিক আহ্বান সম্পর্কিত আয়াতসমূহ নিম্নে পেশ করা হলো:
وَاِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ
“আর তোমাদের উপাস্য একক উপাস্য। তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই, যিনি পরম করুণাময় ও দয়ালু।” (২: ১৬৩)
شَهِدَ اللهُ انَّه لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ وَالْمَلٰٓئِكَةُ وَاُوْلُوْا الْعِلْمِ قَاۤئِمًۢا بِالْقِسْطِ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। ফেরেশতাগণ এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (৩:১৮)
ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاهُوَخٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ فَاعْبُدُوْهُ وَهُوَعَلٰى كُلِّ شَىْءٍ وَّكِيْلٌ
“তিনিই আল্লাহ – তোমাদের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব তাঁরই।” (৬:১০২)
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوْا رَبَّكُمُ الَّذِىْ خَلَقَكُمْ وَالَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ الَّذِىْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ فِرٰشًا وَّالسَّمَآءَ بِنَآءً وَّاَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخْرَجَ بِه مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزْقًا لَّكُمْ فَلَا تَجْعَلُوْا لِلّٰهِ اَنْدَادًا وَّاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদিগকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে। যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল–ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে সমকক্ষ করো না। বস্তুত এসব তোমরা জান।” (২:২১ – ২২)
قُلْ اَغَیْرَ اللّٰهِ اَتَّخِذُ وَلِیًّا فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ هُوَ یُطْعِمُ وَ لَا یُطْعَمُ ؕ قُلْ اِنِّیْۤ اُمِرْتُ اَنْ اَکُوْنَ اَوَّلَ مَنْ اَسْلَمَ وَ لَا تَکُوْنَنَّ مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ قُلْ اِنِّیْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَیْتُ رَبِّیْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ
“আপনি বলে দিন: আমি কি আল্লাহ ব্যতীত – যিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের স্রষ্টা এবং যিনি সবাইকে আহার্য দান করেন ও তাঁকে কেউ আহার্য দান করে না অপরকে সাহায্যকারী স্থির করব? আপনি বলে দিন: আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, সর্বাগ্রে আমিই আজ্ঞাবহ হব। আপনি কদাচ অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না। আপনি বলুন, আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্য হতে ভয় পাই – কেননা, আমি একটি মহাদিবসের শাস্তিকে ভয় করি।” (৬:১৪ – ১৫)
قُلْ اِنَّمَاۤ اَنَا۠ بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوْحٰىۤ اِلَىَّ اَنَّمَاۤ اِلٰهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَمَنْ كَانَ يَرْجُوْا لِقَآءَ رَبِّه فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صٰلِحًا وَّلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِه اَحَدًا
“বলুন : আমিও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।” (১৮:১১০)
ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاهُوَخٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ فَاعْبُدُوْهُ وَهُوَعَلٰى كُلِّ شَىْءٍ وَّكِيْلٌ
“তিনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনিই সব কিছুর স্রষ্টা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তিনি প্রত্যেক বস্তুর কার্যনির্বাহী।” (৬:১০২)
وَهُوَ اللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ لَهُ الْحَمْدُ فِى الْاُوْلٰى وَالْاٰخِرَةِ وَلَهُ الْحُكْمُ وَاِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ
“তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ইহকাল ও পরকালে তাঁরই প্রশংসা। বিধান তাঁরই ক্ষমতাধীন এবং তোমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।” (২৮:৭০)
وَمَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِىۤ اِلَيْهِ اَنَّه لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعْبُدُوْنِ
“আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত কর।” (২১:২৫)
وَلَا تَدْعُ مَعَ اللهِ اِلٰهًا اٰخَرَۘ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ قف كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ اِلَّا وَجْهَه ط لَهُ الْحُكْمُ وَاِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ
“আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহ্বান করবেন না। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হবে। বিধান তাঁরই এবং তোমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।” (২৮:৮৮)
فَاعْلَمْ اَنَّه لَا اِلهَ اِلَّا اللهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنتِ ۗ وَاللهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوىكُمْ
“জেনে রাখুন, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমাপ্রার্থনা করুন, আপনার ত্রুটির জন্যে এবং মু’মিন পুরুষ ও নারীদের জন্যে। আল্লাহ, তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞাত।” (৪৭:১৯)
ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ خٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ لَّاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ فَاَنّٰى تُؤْفَكُوْنَ
“তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা, সব কিছুর স্রষ্টা। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ ।” (৪০:৬২)
اَللهُ الَّذِىْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ قَرَارًا وَّالسَّمَآءَ بِنَآءً وَصَوَّرَكُمْ فَاَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُمْ مِّنَ الطَّيِّبٰتِ ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ فَتَبَارَكَ اللهُ رَبُّ الْعٰلَمِيْنَ
“আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়।” (৪০:৬৪)
هُوَ الْحَىُّ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ فَادْعُوْهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
“তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি এবাদতের মাধ্যমে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর।” (৪০:৬৫)
قُلْ اِنِّىْ نُهِيْتُ اَنْ اَعْبُدَ الَّذِيْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ لَمَّا جَآءَنِىَ الْبَيِّنَاتُ مِنْ رَّبِّىْ وَاُمِرْتُ اَنْ اُسْلِمَ لِرَبِّ الْعَالَمِيْنَ
“(হে নবী) বলুন, যখন আমার কাছে আমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণাদি এসে গেছে, তখন আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যার পূজা কর, তার এবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। আমাকে আদেশ করা হয়েছে বিশ্ব-পালনকর্তার অনুগত থাকতে।” (৪০:৬৬ – ৬৭)
وَهُوَ الَّذِىْ فِى السَّمَآءِ اِلٰهٌ وَفِى الْاَرْضِ اِلٰهٌ وَهُوَ الْحَكِيْمُ الْعَلِيْمُ وَتَبَارَكَ الَّذِىْ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَعِنْدَه عِلْمُ السَّاعَةِ وَاِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ
“তিনিই উপাস্য নভোমন্ডলে এবং তিনিই উপাস্য ভূমন্ডলের। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ, বরকতময় তিনিই, নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু যাঁর। তাঁরই কাছে আছে ক্বিয়ামতের জ্ঞান এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।” (৪৩:৮৪ – ৮৫)
قُلْ اَىُّ شَىْءٍاَكْبَرُ شَهٰدَةً قُلِ اللهُ شَهِيْدٌۢ بَيْنِىْ وَبَيْنَكُمْ وَاُوْحِىَ اِلَىَّ هٰذَا الْقُرْاٰنُ لِاُنْذِرَكُمْ بِهوَمَنْ ۢ بَلَغَ اَئِنَّكُمْ لَتَشْهَدُوْنَ اَنَّ مَعَ اللهِ اٰلِهَةً اُخْرٰى قُلْ لَّاۤ اَشْهَدُ ج قُلْ اِنَّمَا هُوَ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ وَاِنَّنِىْ بَرىْٓءٌ مِّمَّا تُشْرِكُوْنَ
“(হে নবী) আপনি জিজ্ঞেস করুন: সর্ববৃহৎ সাক্ষ্যদাতা কে ? বলে দিন: আল্লাহ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। আমার প্রতি এ কুরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে – যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কুরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি। তোমরা কি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহর সাথে অন্যান্য উপাস্যও রয়েছে? আপনি বলে দিন: আমি এরূপ সাক্ষ্য দেব না। বলে দিন: তিনিই একমাত্র উপাস্য; আমি অবশ্যই তোমাদের শিরক থেকে মুক্ত।” (৬:১৯)
وَيَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُوْلُوْنَ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنْدَ اللهِ ط قُلْ اَتُنَبِّـُٔوْنَ اللهَ بِمَا لَا يَعْلَمُ فِى السَّمٰوٰتِ وَلَا فِى الْاَرْضِ ط سُبْحٰنَه وَتَعٰلٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
“আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। (হে নবী) বলুন, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে? তিনি পূত-পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছ।” (১০:১৮)
رَّبُّ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِه هَلْ تَعْلَمُ لَه سَمِيًّا
“তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবার পালনকর্তা। সুতরাং তাঁরই বন্দেগী করুন এবং তাতে দৃঢ় থাকুন – আপনি কি তাঁর সমনাম কাউকে জানেন?” (১৯:৬৫)
وَلَا تَدْعُ مِنْ دُوْنِ اللهِ مَا لَا يَنْفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَ فَاِنْ فَعَلْتَ فَاِنَّكَ اِذًا مِّنَ الظّٰلِمِيْنَ
“আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকবে না, যে তোমার ভাল করবে না মন্দও করবে না। বস্তুত তুমি যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।” (১০:১০৬)
قُلْ اِنِّیْۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ اللّٰهَ مُخْلِصًا لَّهُ الدِّیْنَ وَ اُمِرْتُ لِاَنْ اَکُوْنَ اَوَّلَ الْمُسْلِمِیْنَ قُلْ اِنِّیْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَیْتُ رَبِّیْ عَذَابَ یَوْمٍ عَظِیْمٍ
“বলুন, আমি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি। আরও আদিষ্ট হয়েছি, সর্বপ্রথম নির্দেশ পালনকারী হওয়ার জন্যে। বলুন, আমি আমার পালনকর্তার অবাধ্য হলে এক মহাদিবসের শাস্তির ভয় করি।” (৩৯:১১ – ১৩)
لَوْ كَانَ فِيْهِمَاۤ اٰلِهَةٌ اِلَّا اللهُ لَفَسَدَتَا فَسُبْحٰنَ اللهِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُوْنَ لَا يُسْـَٔلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْـَٔلُوْنَ اَمِ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِه اٰلِهَةً قُلْ هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ هٰذَا ذِكْرُ مَنْ مَّعِىَ وَذِكْرُ مَنْ قَبْلِى ط بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ لا الْحَقَّ فَهُمْ مُّعْرِضُوْنَ وَمَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا نُوْحِىْۤ اِلَيْهِ اَنَّه لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا۠ فَاعْبُدُوْنِ وَقَالُوْا اتَّخَذَ الرَّحْمٰنُ وَلَدًا ۗ سُبْحٰنَه بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُوْنَ لَا يَسْبِقُوْنَه بِالْقَوْلِ وَهُمْ بِاَمْرِه يَعْمَلُوْنَ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يَشْفَعُوْنَ اِلَّا لِمَنِ ارْتَضٰى وَهُمْ مِّنْ خَشْيَتِه مُشْفِقُوْنَ وَمَنْ يَّقُلْ مِنْهُمْ اِنِّىْۤ اِلٰهٌ مِّنْ دُوْنِه فَذٰلِكَ نَجْزِيْهِ جَهَنَّمَ كَذٰلِكَ نَجْزِى الظّٰلِمِيْنَ
“যদি নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র। তিনি যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। তারা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য গ্রহণ করেছে? বলুন, তোমরা তোমাদের প্রমাণ আন। এটাই আমার সঙ্গীদের কথা এবং এটাই আমার পূর্ববর্তীদের কথা। বরং তাদের অধিকাংশই সত্য জানে না; অতএব তারা টালবাহানা করে। আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি, তাকে এ আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। সুতরাং আমারই এবাদত কর। তারা বলল: দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তাঁর জন্য কখনও ইহা যোগ্য নয়; বরং তারা তো তাঁর সম্মানিত বান্দা। তারা আগে বেড়ে কথা বলতে পারে না এবং তারা তাঁর আদেশেই কাজ করে। তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা আছে, তা তিনি জানেন। তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত। তাদের মধ্যে যে বলে যে, তিনি ব্যতীত আমিই উপাস্য, তাকে আমি জাহান্নামের শাস্তি দেব। আমি যালেমদেরকে এভাবেই প্রতিফল দিয়ে থাকি ।” (২১:২২ – ২৯)
مَا اتَّخَذَ اللهُ مِنْ وَّلَدٍ وَّمَا كَانَ مَعَه مِنْ اِلٰهٍ اِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ اِلٰهٍۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ ط سُبْحٰنَ اللهِ عَمَّا يَصِفُوْنَ
“আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র।” (২৩:৯১)
اَمَّنْ جَعَلَ الْاَرْضَ قَرَارًا وَّجَعَلَ خِلٰلَهَاۤ اَنْهٰرًا وَّجَعَلَ لَهَا رَوٰسِىَ وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزًا ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ط بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ اَمَّنْ يُّجِيْبُ الْمُضْطَرَّ اِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوْٓءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَآءَ الْاَرْضِ ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ط قَلِيْلًا مَّا تَذَكَّرُوْنَ اَمَّنْ يَهْدِيْكُمْ فِىْ ظُلُمٰتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَنْ يُّرْسِلُ الرِّيٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِه ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ط تَعٰلَى اللهُ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ اَمَّنْ يَّبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه وَمَنْ يَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ط قُلْ هَاتُوْا بُرْهٰنَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ
“বল তো কে পৃথিবীকে বাসোপযোগী করেছেন এবং তার মাঝে মাঝে নদ–নদী প্রবাহিত করেছেন এবং তাকে স্থিত রাখার জন্যে পর্বত স্থাপন করেছেন এবং দুই সমুদ্রের মাঝখানে অন্তরায় রেখেছেন। অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তাদের অধিকাংশই জানে না। বল তো কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পূর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই লক্ষ্য কর। বল তো কে তোমাদেরকে জলে ও স্থলে অন্ধকারে পথ দেখান এবং যিনি তাঁর অনুগ্রহের পূর্বে সুসংবাদবাহী বাতাস প্রেরণ করেন? অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে। বল তো কে প্রথমবার সৃষ্টি করেন, অতঃপর তাকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন এবং কে তোমাদেরকে আকাশ ও মর্ত্য থেকে রিযিক দান করেন। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বলুন, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (২৭:৬১ – ৬৪)
….. اِنَّ اللهَ سَمِيْعٌۢ بَصِيْرٌ اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يُوْلِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَّجْرِىْ اِلٰى اَجَلٍ مُّسَمًّى وَاَنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ هُوَ الْحَقُّ وَاَنَّ مَا يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهِ الْبَاطِلُ وَاَنَّ اللهَ هُوَ الْعَلِىُّ الْكَبِيْرُ
“……নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন। তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন? এটাই প্রমাণ যে, আল্লাহ-ই সত্য এবং আল্লাহ ব্যতীত তারা যাদের পূজা করে সব মিথ্যা। আল্লাহ সর্বোচ্চ, মহান।” (৩১:২৮ – ৩০)
আল্লাহ্ তায়ালা সর্বশক্তিমান ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক
وَلِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“আর আল্লাহর জন্যই হল আসমান ও যমিনের বাদশাহী। আল্লাহই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতার অধিকারী।” (৩:১৮৯)
قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِى الْمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَآءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ اِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ تُوْلِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُوْلِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَىَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَىِّ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
“(হে নবী) বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। তুমি রাতকে দিনের আলোয় আলোকিত কর এবং দিনকে রাতের আঁধারে ঢেকে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃত কর এবং মৃতকেও জীবন দান কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসেব জীবিকা দান কর।” (৩:২৬ – ২৭)
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ وَلِىٍّ وَّلَا نَصِيْرٍ
“তুমি কি জান না যে, আল্লাহর জন্যই নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের আধিপত্য? আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই।” (২:১০৭)।”
اِنَّ رَبَّكَ يَقْضِىْ بَيْنَهُمْ بِحُكْمِه وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْعَلِيْمُ
“আপনার পালনকর্তা নিজ কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। তিনি পরাক্রমশালী, সুবিজ্ঞ।” (২৭:৭৮)
وَلَا يُشْرِكُ فِي حُكْمِهِ اَحَدًا
“…….তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না ।” (১৮:২৬)
بَلْ لَّه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط كُلٌّ لَّه قٰنِتُوْنَ بَدِيْعُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط وَاِذَا قَضٰىۤ اَمْرًا فَاِنَّمَا يَقُوْلُ لَه كُنْ فَيَكُوْنُ
“……বরং নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর আজ্ঞাধীন। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উদ্ভাবক। যখন তিনি কোন কার্য সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে একথাই বলেন, ‘হয়ে যাও’ তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়।” (২:১১৬ – ১১৭)
وَلِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط وَاِلَى اللهِ الْمَصِيْرُ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।” (২৪:৪২)
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط يُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ وَيَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَآءُ ط وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“তুমি কি জান না যে আল্লাহর নিমিত্তেই নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের একক আধিপত্য। তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (৫:৪০)
فَتَعٰلَى اللهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمِ
“অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক।” (২৩:১১৬)
وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِه وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً ط حَتّٰىۤ اِذَاجَآءَ اٰحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُوْنَ ثُمَّ رُدُّوْۤا اِلَى اللهِ مَوْلٰىهُمُ الْحَقِّ ط اَلَا لَهُ الْحُكْمُ قف وَهُوَ اَسْرَعُ الْحٰسِبِيْنَ
“তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রবল। তিনি প্রেরণ করেন তোমাদের কাছে রক্ষণাবেক্ষণকারী (ফেরেশতা)। এমন কি, যখন তোমাদের কারও মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়। অতঃপর সবাইকে সত্যিকার প্রভু আল্লাহর কাছে পৌঁছানো হবে। শুনে রাখ, ফয়সালা তাঁরই এবং দ্রুত হিসাব গ্রহণে তিনি অতীব তৎপর।” (৬:৬১-৬২)
وَرَبُّكَ الْغَنِىُّ ذُوْ الرَّحْمَةِ اِنْ يَّشَاْ يُذْهِبْكُمْ وَيَسْتَخْلِفْ مِنْۢ بَعْدِكُمْ مَّا يَشَآءُ كَمَآ اَنْشَاَكُمْ مِّنْ ذُرِّيْةِ قَوْمٍ اٰخَرِيْنَ
“আপনার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী, করুণাময়। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে উচ্ছেদ করে দিবেন এবং তোমাদের পর যাকে ইচ্ছা তোমাদের স্থলে অভিষিক্ত করবেন; যেমন তোমাদেরকে অন্য এক সম্প্রদায়ের বংশধর থেকে সৃষ্টি করেছেন।” (৬:১৩৩)
وَلِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ وَكَانَ اللهُ بِكُلِّ شَىْءٍ مُّحِيْطًا
“যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভূমন্ডলে যা আছে, সব আল্লাহরই। সব বস্তু আল্লাহর মুষ্টি বলয়ে।” (৪:১২৬)
اِنَّ اللهَ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط يُحْى وَيُمِيْتُ ط وَمَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيْرٍ
“নিশ্চয় আল্লাহরই জন্য আসমানসমূহ ও যমীনের সাম্রাজ্য। তিনিই জিন্দা করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের জন্য কোন সহায়ও নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই।” (৯: ১১৬)
لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ ط وَاِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْۤ اَنفُسِكُمْ اَوْ تُخْفُوْهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللهُ ط فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُط وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (২:২৮৪)
وَلَهمَنْ فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ كُلٌّ لَّه قٰنِتُوْنَ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সব তাঁরই। সবাই তাঁর আজ্ঞাবহ।” (৩০:২৬)
هُوَ الَّذِىْ يُصَوِّرُكُمْ فِى الْاَرْحَامِ كَيْفَ يَشَآءُ ط لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“তিনিই সেই আল্লাহ, যিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করেন মায়ের গর্ভে, যেমন তিনি চেয়েছেন। তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তিনি প্রবল পরাক্রমশীল, প্রজ্ঞাময়।” (৩:৬)
اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيْتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيْكُمْ هَلْ مِنْ شُرَكَآئِكُمْ مَّنْ يَّفْعَلُ مِنْ ذٰلِكُمْ مِّنْ شَىْءٍ سُبْحٰنَه وَتَعٰلٰى عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
“আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান।” (৩০:৪০)
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (৫৭:১–৩), (২২:১৮) [সেজদার আয়াত]
وَقُلِ الْحَمْدُ للهِ الَّذِىْ لَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُن لَّه شَرِيْكٌ فِى الْمُلْكِ وَلَمْ يَكُن لَّه وَلِىٌّ مِنَ الذُّلِّ وَكَبِّرْهُ تَكْبِيْرًۢا
“(হে নবী) বলুন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি না কোন সন্তান রাখেন, না তাঁর সার্বভৌমত্বে কোন শরীক আছে এবং যিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না, যে কারণে তাঁর কোন সাহয্যকারীর প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং আপনি সসম্ভ্রমে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করতে থাকুন।” (১৭:১১১)
سَبَّحَ لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ يُحْىِۦ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ هُوَ الْاَوَّلُ وَالْاٰخِرُ وَالظّٰهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌ هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِى سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى الْاَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيْهَا وَهُوَ مَعَكُمْ اَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ لَّه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاِلَى اللهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ يُوْلِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ وَهُوَ عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। সবকিছু তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। তিনি রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রিতে। তিনি অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কেও সম্যক জ্ঞাত।” (৫৭:১ – ৬)
اَللهُ لَآ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ لَا تَاْخُذُه سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَّه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِندَه اِلَّا بِاِذْنِه يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِنْ عِلْمِه اِلَّا بِمَا شَآءَ وَسِعَ كُرْسِيْهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَلَا يَـُٔوْدُه حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ
“আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানভান্ডার থেকে তারা কোন কিছুই আয়ত্ত¡ করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।” (২:২৫৫)
اَوَلَمْ يَرَوْا اَنَّ اللهَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَلَمْ يَعْىَ بِخَلْقِهِنَّ بِقٰدِرٍ عَلَىٰٓ اَن يُحْىِءَ الْمَوْتَىٰ ط بَلَىٰۤ اِنَّهُۥ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
“তারা কি জানে না যে, আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলোর সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেননি, তিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম? কেন নয়, নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।” (৪৬:৩৩)
قُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ وَسَلٰمٌ عَلٰى عِبَادِهِ الَّذِيْنَ اصْطَفٰى ط ءٰ ٓ اللهُ خَيْرٌ اَمَّا يُشْرِكُوْنَ
“(হে নবী) বলুন, সকল প্রশংসাই আল্লাহর এবং শান্তি তাঁর মনোনীত বান্দাগণের প্রতি! শ্রেষ্ঠ কে? আল্লাহ না ওরা – যাদেরকে তারা (আল্লাহর সাথে) শরীক সাব্যস্ত করে।” (২৭:৫৯)
اَمَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَاَنْزَلَ لَكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ مَآءً ج فَاَنْۢبَتْنَا بِه حَدَآئِقَ ذَاتَ بَهْجَةٍ ج مَّا كَانَ لَكُمْ اَنْ تُنْۢبِتُوْا شَجَرَهَاط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ط بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَّعْدِلُوْنَ
“অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ)― যিনি সৃষ্টি করেছেন নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং আকাশ থেকে তোমাদের জন্যে বর্ষণ করেছেন পানি; অতঃপর তা দ্বারা আমি মনোরম বাগান সৃষ্টি করেছি। তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার শক্তিই তোমাদের নেই। অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তারা সত্যবিচ্যুত সম্প্রদায়।” (২৭:৬০)
اَمَّنْ جَعَلَ الْاَرْضَ قَرَارًا وَّجَعَلَ خِلٰلَهَاۤ اَنْهٰرًا وَّجَعَلَ لَهَا رَوٰسِىَ وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزًا ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ
“অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ) – যিনি পৃথিবীকে বাসোপযোগী করেছেন এবং তার মাঝে মাঝে নদ–নদী প্রবাহিত করেছেন এবং তাকে স্থিত রাখার জন্যে পর্বত স্থাপন করেছেন এবং দুই সমুদ্রের মাঝখানে অন্তরায় রেখেছেন। অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? বরং তাদের অধিকাংশই জানে না।” (২৭:৬১)
اَمَّنْ يُّجِيْبُ الْمُضْطَرَّ اِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوْٓءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَآءَ الْاَرْضِط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِط قَلِيْلًا مَّا تَذَكَّرُوْنَ
“অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ) – যিনি নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভ‚ত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি বানান। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর।” (২৭:৬২)
اَمَّنْ يَّهْدِيْكُمْ فِىْ ظُلُمٰتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَنْ يُرْسِلُ الرِّيٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَىْ رَحْمَتِه ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ تَعٰلَى اللهُ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
“অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ) – যিনি তোমাদেরকে জলে ও স্থলে অন্ধকারে পথ দেখান এবং যিনি তাঁর অনুগ্রহের পূর্বে সুসংবাদবাহী বাতাস প্রেরণ করেন? অতএব, আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।” (২৭:৬৩)
اَمَّنْ يَّبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُه وَمَنْ يَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ ط ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ قُلْ هَاتُوْا بُرْهٰنَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ
“অথবা তিনি (শ্রেষ্ঠ) – যিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেন, অতঃপর তাকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন এবং কে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে রিযিক দান করেন। সুতরাং আছে কি আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য? বলুন, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।” (২৭:৬৪)
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْاَعْلَى الَّذِىْ خَلَقَ فَسَوّٰى وَالَّذِىْ قَدَّرَ فَهَدٰى وَالَّذِىْۤ اَخْرَجَ الْمَرْعٰى فَجَعَلَه غُثَآءً اَحْوٰى
“(হে নবী) আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন, যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন এবং যিনি তৃণাদি উৎপন্ন করেছেন, অতঃপর করেছেন তাকে কালো আবর্জনা।” (৮৭:১ – ৫)
وَاَنَّ اِلٰى رَبِّكَ الْمُنْتَهٰى وَاَنَّه هُوَ اضْحَكَ وَاَبْكٰى وَاَنَّه هُوَ امَاتَ وَاَحْيَا وَاَنَّه خَلَقَ الزَّوْجَيْنِ الذَّكَرَ وَالْاُنثٰى مِنْ نُّطْفَةٍ اِذَا تُمْنٰى وَاَنَّ عَلَيْهِ النَّشْاَةَ الْاُخْرٰى وَاَنَّه هُوَ اغْنٰى وَاَقْنٰى
“তোমার পালনকর্তার কাছে সবকিছুর পরিসমাপ্তি, এবং তিনিই হাসান ও কাঁদান এবং তিনিই মারেন ও বাঁচান, এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল-পুরুষ ও নারী। একবিন্দু বীর্য থেকে যখন স্খলিত করা হয়। পুনরুত্থানের দায়িত্ব তাঁরই, এবং তিনিই ধনবান করেন ও সম্পদ দান করেন।” (৫৩:৪২ – ৪৮)
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اَنْتُمُ الْفُقَرَآءُ اِلَى اللهِ ج وَاللهُ هُوَ الْغَنِىُّ الْحَمِيْدُ اِنْ يَّشَاْ يُذْهِبْكُمْ وَيَاْتِ بِخَلْقٍ جَدِيْدٍ وَمَا ذٰلِكَ عَلَى اللهِ بِعَزِيْزٍ
“হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর মুখাপেক্ষী। আর আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে বিলুপ্ত করে এক নতুন সৃষ্টির উদ্ভব করবেন। এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়।” (৩৫:১৫ – ১৭)
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ يُوْلِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ وَاَنَّ اللهَ سَمِيْعٌۢ بَصِيْرٌ ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ هُوَ الْحَقُّ وَاَنَّ مَا يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِه هُوَ الْبٰطِلُ وَاَنَّ اللهَ هُوَ الْعَلِىُّ الْكَبِيْرُ اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَتُصْبِحُ الْاَرْضُ مُخْضَرَّةً ط اِنَّ اللهَ لَطِيْفٌ خَبِيْرٌ لَّه مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ ط وَاِنَّ اللهَ لَهُوَ الْغَنِىُّ الْحَمِيْدُ
“এটা এ জন্যে যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিনের মধ্যে এবং দিনকে রাত্রির মধ্য দাখিল করে দেন এবং আল্লাহ সবকিছু শুনেন, দেখেন। এটা এ কারণেও যে, আল্লাহই সত্য; আর তাঁর পরিবর্তে তারা যাকে ডাকে, তা অসত্য এবং আল্লাহই সবার উচ্চে, মহান। তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর ভূপৃষ্ট সবুজ-শ্যামল হয়ে উঠে। নিশ্চয় আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, সর্ববিষয়ে খবরদার। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সব তাঁরই এবং আল্লাহই অভাবমুক্ত, প্রশংসার অধিকারী।” (২২:৬১ – ৬৪)
আল্লাহ্ তায়ালা সর্বজ্ঞ, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ও সর্বব্যাপী
وَلِلَّهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ۚ فَأَيْنَمَا تُوَلُّوا فَثَمَّ وَجْهُ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
“পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।” (২:১১৫)
اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
“……… দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।” (২:২৫৫)
وَعِنْدَه مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَايَعْلَمُ هَاۤ اِلَّا هُوَ وَيَعْلَمُ مَا فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَا تَسْقُطُ مِنْ وَّرَقَةٍ اِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَاحَبَّةٍ فِىْ ظُلُمٰتِ الْاَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَّلَا يَابِسٍ اِلَّا فِىْ كِتٰبٍ مُّبِيْنٍ
“তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এগুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না যা তাঁর নিকট অজ্ঞাত। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুষ্ক দ্রব্য পতিত হয় না যেগুলো এ সুস্পষ্ট গ্রন্থে বিদ্যমান নেই।” (৬:৫৯)
لَّا تُدْرِكُهُ الْاَبْصٰرُ وَهُوَ يُدْرِكُ الْاَبْصٰرَ وَهُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ
“দৃষ্টিসমূহ তাঁকে দেখতে পায় না, অবশ্য সবকিছুই তাঁর নিকট দৃশ্যমান। তিনি অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক পরিজ্ঞাতা।” (৬:১০৩)
وَكَانَ اللهُ سَمِيْعًا بَصِيْرًا
“………আর আল্লাহ সব কিছু শুনেন ও দেখেন।” (৪:১৩৪)
اِنَّهُ هُوَ السَّمِيْعُ البَصِيْرُ
“……..নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দৃষ্টিসম্পন্ন।” (১৭:১)
اِنَّ اللهَ لَا يَخْفٰى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِى الْاَرْضِ وَلَا فِى السَّمَاءِ
“নিশ্চিতভাবেই আল্লাহর নিকট আসমান ও যমীনের কোন বিষয়ই গোপন নেই।” (৩:৫)
وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِيْنَ مِنْكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَـْٔخِرِيْنَ وَاِنَّ رَبَّكَ هُوَ يَحْشُرُهُمْ اِنَّه حَكِيْمٌ عَلِيْمٌ
“আমি জানি যারা তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে এবং (তেমনি) জানি তোমাদের পরবর্তীদেরকেও। আপনার পালনকর্তাই তাদের (সকলকে) একত্রিত করে আনবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানময়।” (১৫:২৪ – ২৫)
وَهُوَ اللهُ فِى السَّمٰوٰتِ وَفِى الْاَرْضِ يَعْلَمُ سِرَّكُمْ وَجَهْرَكُمْ وَيَعْلَمُ مَا تَكْسِبُوْنَ
“তিনিই আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে। তিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় জানেন এবং তোমরা যা কর তাও অবগত।” (৬:৩)
اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ وَّمِنَ الاَرْضِ مِثْلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ الْاَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ وَاَنَّ اللهَ قَدْ اَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًۢا
“আল্লাহ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু তাঁর গোচরীভূত।” (৬৫:১২)
قُلْ اِنْ تُخْفُوْا مَا فِىْ صُدُوْرِكُمْ اَوْ تُبْدُوْهُ يَعْلَمْهُ اللهُ وَيَعْلَمُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ ۗ وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“বলে দিন, তোমরা যদি মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সেসব ও তিনি জানেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।” (৩:২৯)
اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ قَدْ يَعْلَمُ مَاۤ اَنْتُمْ عَلَيْهِ وَيَوْمَ يُرْجَعُوْنَ اِلَيْهِ فَيُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا وَاللهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌۢ
“মনে রেখোনভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা আছে, তা আল্লাহরই। তোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি জানেন। যেদিন তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে, সেদিন তিনি বলে দেবেন তারা যা করেছে। আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ই জানেন।” (২৪:৬৪)
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَىْءٍ مِنْ عِلْمِه اِلَّا بِمَا شَآءَ وَسِعَ كُرْسِيْهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَلَا يَـُٔوْدُه حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِىُّ الْعَظِيْمُ
“……দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানভান্ডার থেকে তারা কোন কিছুই আয়ত্ত¡ করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।” (২:২৫৫)
يَعْلَمُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُسِرُّوْنَ وَمَا تُعْلِنُوْنَ ط وَاللهُ عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ
“নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা আছে, তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা গোপনে কর এবং যা প্রকাশ্যে কর। আল্লাহ অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।” (৬৪:৪)
اِنَّ اللهَ عِنْدَه عِلْمُ السَّاعَةِ ج وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ ج وَيَعْلَمُ مَا فِى الْاَرْحَامِ ط وَمَا تَدْرِىْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ط وَّمَا تَدْرِىْ نَفْسٌۢ بِاَىِّ اَرْضٍ تَمُوْتُ ط اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌۢ
“নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই ক্বিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকল্য সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (৩১:৩৪)
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا فِى السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ ۗ اِنَّ ذٰلِكَ فِىْ كِتٰبٍ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ
“তুমি কি জান না যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু আকাশে ও ভূন্ডলে আছে এসব কিতাবে লিখিত আছে। এটা আল্লাহর কাছে সহজ।” (২২:৭০)
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَاِلَى اللهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ
“তিনি জানেন যা তাদের সামনে আছে এবং যা পশ্চাতে আছে এবং সবকিছু আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।” (২২:৭৬)
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ مَا يَكُوْنُ مِنْ نَّجْوٰى ثَلٰثَةٍ اِلَّا هُوَ رَابِعُهُمْ وَلَا خَمْسَةٍ اِلَّا هُوَ سَادِسُهُمْ وَلَاۤ اَدْنٰى مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْثَرَ اِلَّا هُوَ مَعَهُمْ اَيْنَ مَا كَانُوْا ثُمَّ يُنَبِّئُهُمْ بِمَا عَمِلُوْا يَوْمَ الْقِيٰمَةِ اِنَّ اللهَ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌ
“আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি ক্বিয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (৫৮:৭)
قُلْ لَّا يَعْلَمُ مَنْ فِى السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ الْغَيْبَ اِلَّا اللهُ وَمَا يَشْعُرُوْنَ اَيَّانَ يُبْعَثُوْنَ
“বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে।” (২৭:৬৫)
وَمَا تَكُوْنُ فِى شَاْنٍ وَمَا تَتْلُوْا مِنْهُ مِنْ قُرْاٰنٍ وَلَا تَعْمَلُوْنَ مِنْ عَمَلٍ اِلَّا كُنَّا عَلَيْكُمْ شُهُوْدًا اِذْ تُفِيْضُوْنَ فِيْهِ وَمَا يَعْزُبُ عَن رَّبِّكَ مِنْ مِّثْقَالِ ذَرَّةٍ فِى الْاَرْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ وَلَاۤ اَصْغَرَ مِنْ ذٰلِكَ وَلَاۤ اَكْبَرَ اِلَّا فِىْ كِتٰبٍ مُّبِيْنٍ
“বস্তুত যে কোন অবস্থাতেই তুমি থাক এবং কুরআনের যে কোন অংশ থেকেই পাঠ কর কিংবা যে কোন কাজই তোমরা কর অথচ আমি তোমাদের নিকটে উপস্থিত থাকি যখন তোমরা তাতে আত্মনিয়োগ কর। আর তোমার পরওয়ারদেগার থেকে গোপন থাকে না একটি কণাও, না যমীনের এবং না আসমানের। না এর চেয়ে ক্ষুদ্র কোন কিছু আছে, না বড় যা এই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।” (১০:৬১)
یَعْلَمُ مَا یَلِجُ فِی الْاَرْضِ وَ مَا یَخْرُجُ مِنْهَا وَ مَا یَنْزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَ مَا یَعْرُجُ فِیْهَا ؕ وَ هُوَ الرَّحِیْمُ الْغَفُوْرُ وَ قَالَ الَّذِیْنَ كَفَرُوْا لَا تَاْتِیْنَا السَّاعَۃُ ؕ قُلْ بَلٰی وَ رَبِّیْ لَتَاْتِیَنَّکُمْ لا عٰلِمِ الْغَیْبِ ۚ لَا یَعْزُبُ عَنْهُ مِثْقَالُ ذَرَّۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الْاَرْضِ وَ لَاۤ اَصْغَرُ مِنْ ذٰلِكَ وَ لَاۤ اَکْبَرُ اِلَّا فِیْ كِتٰبٍ مُّبِیْنٍ ٭ۙ
“তিনি জানেন যা ভূগর্ভে প্রবেশ করে, যা সেখান থেকে নির্গত হয়, যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় এবং যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি পরম দয়ালু ক্ষমাশীল। কাফেররা বলে আমাদের উপর ক্বিয়ামত আসবে না। বলুন কেন আসবে না? আমার পালনকর্তার শপথ – অবশ্যই আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত। নভোমন্ডল, ভূমন্ডলে তাঁর অগোচরে নয় অণু পরিমাণ কিছু, না তদপেক্ষা ক্ষুদ্র এবং না বৃহৎ – সমস্তই আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।” (৩৪:২ – ৩)
هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِى الْاَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَآءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيْهَا وَهُوَ مَعَكُمْ اَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِيْرٌ
“তিনি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়দিনে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন। তিনি জানেন যা ভ‚মিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়। তিনি তোমাদের সাথে আছেন তোমরা যেখানেই থাক। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।” (৫৭:৪)
قُلِ اللهُ اَعْلَمُ بِمَا لَبِثُوْا لَه غَيْبُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ اَبْصِرْ بِه وَاَسْمِعْ مَا لَهُمْ مِّنْ دُوْنِه مِنْ وَّلِىٍّ وَّلَا يُشْرِكُ فِىْ حُكْمِه اَحَدًا
“…….নভোমন্ডল, ভূমন্ডলের অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি কত চমৎকার দেখেন ও শুনেন। তিনি ব্যতীত তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। তিনি কাউকে নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেন না ।” (১৮:২৬)
قَالُوْا سُبْحٰنَكَ لَا عِلْمَ لَنَاۤ اِلَّا مَا عَلَّمْتَنَاۤ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَلِيْمُ الْحَكِيْمُ قَالَ يٰۤاٰدَمُ اَنۢبِئْهُمْ بِاَسْمَآئِهِمْ فَلَمَّاۤ اَنۢبَاَهُمْ بِاَسْمَاۤئِهِمْ قَالَ اَلَمْ اَقُلْ لَّكُمْ اِنِّىۤ اَعْلَمُ غَيْبَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاَعْلَمُ مَا تُبْدُوْنَ وَمَا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ
“তারা (ফেরেশতাগণ) বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা। তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সেসবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর।” (২:৩২ – ৩৩)
وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ يَعْلَمُ مَا فِىۤ اَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوْهُ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ غَفُوْرٌ حَلِيْمٌ
“…….আর একথা জেনে রেখো যে, তোমাদের মনে যে কথা রয়েছে, আল্লাহর তা জানা আছে। কাজেই তাঁকে ভয় করতে থাক। আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ ক্ষমাকারী ও ধৈর্য্যশীল।” (২:২৩৫)
لِلّٰهِ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ وَاِنْ تُبْدُوْا مَا فِىْۤ اَنْفُسِكُمْ اَوْ تُخْفُوْهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ ط وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (২:২৮৪)
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِه عِلْمًا
“তিনি জানেন যা কিছু তাদের সামনে ও পশ্চাতে আছে এবং তারা তাকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারে না।” (২০:১১০)
وَاَسِرُّوْا قَوْلَكُمْ اَوِ اجْهَرُوْا بِه اِنَّه عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ اَلَا يَعْلَمُ مَنْ خَلَقَ وَهُوَ اللَّطِيْفُ الْخَبِيْرُ
“তোমরা তোমাদের কথা গোপনে বল অথবা প্রকাশ্যে বল, তিনি তো অন্তরের বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক অবগত। যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি করে জানবেন না? তিনি সূক্ষ্ম জ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত।” (৬৭:১৩ – ১৪)
عٰلِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهٰدَةِ الْكَبِيْرُ الْمُتَعَالِ سَوَآءٌ مِّنْكُمْ مَّنْ اَسَرَّ الْقَوْلَ وَمَنْ جَهَرَ بِه وَمَنْ هُوَ مُسْتَخْفٍۭ بِالَّيْلِ وَسَارِبٌۢ بِالنَّهَارِ
“তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। তোমাদের মধ্যে কেউ গোপনে কথা বলুক বা তা সশব্দে প্রকাশ করুক, রাতের অন্ধকারে সে আত্মগোপন করুক বা প্রকাশ্য দিবালোকে বিচরণ করুক, সবাই তাঁর নিকট সমান।” (১৩:৯ – ১০)
هُوَ اللهُ الَّذِىْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ عٰلِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهٰدَةِ هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِيْمُ
“তিনিই আল্লাহ তা’আলা, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা।” (৫৯:২২)
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তক্বদীর বা ভাগ্যলিপির নির্ধারক
“……. আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (১৩:১১)
মানুষের তক্বদীর বা ভাগ্যলিপির নির্ধারণ করেন আল্লাহ্। তাঁর নির্দেশেই নির্ধারিত হয় মানুষ ও অন্য সব সৃষ্টির ভাগ্য। আল্লাহ ভাগ্যের ভাল ও মন্দ পূর্ব থেকেই নির্ধারিত করে দিয়েছেন। এসব কিছুই মহান আল্লাহর মহা পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু মানুষকে ভাল ও মন্দ বুঝার মত জ্ঞান দেওয়া হয়েছে এবং ভাল ও মন্দ উভয় পথে চলার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তাই তার কর্মই নির্ধারিত করবে তার চরম পরিণতি। যারা তাদের কর্মের স্বাধীনতাকে আল্লাহর নির্ধারিত পথে পরিচালিত করে তারা কর্মফল অনুযায়ী আখিরাতে পুরস্কৃত হবে এবং জান্নাত লাভ করবে। আর যারা এ স্বাধীনতার যথেচ্ছাচারিতা করবে এবং বিপথে চলবে তাদের পরিণতি হবে দুঃখজনক, তারাই হবে জাহান্নামের অধিবাসী।
এ দুনিয়ায় মানুষের কল্যাণ–অকল্যাণ, সুখ–দুঃখ, সচ্ছলতা–অসচ্ছলতা, অভাব–প্রাচুর্য, লাভ–ক্ষতি, সুস্থতা ও অসুস্থতা, নিরাপত্তা ও বিপদগ্রস্ততা সবকিছুই আল্লাহর তরফ থেকে আসে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য। মানুষ যদি সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধারণ করে এবং একমাত্র আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তাহলে সে আখিরাতে লাভ করবে বিরাট সাফল্য এবং পুরস্কারস্বরূপ লাভ করবে জান্নাত। মানুষের যেসব বিভিন্নমুখী প্রচেষ্টা তার ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হয় তাও পূর্ব নির্ধারিত তক্বদীরের অন্তর্ভুক্ত। এসব কিছুই আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে সকল প্রতিকূলতার মধ্যেও সাফল্য দিতে পারেন, আর তাঁর মদদ না থাকলে দুনিয়ার কোন শক্তির সাধ্য নেই যে কারো কোন উপকার করতে পারে। অর্থাৎ ভাগ্যলিপিতে যা নির্ধারিত আছে ততটুকুই মানুষ পাবে। অপরদিকে তক্বদীরের ওপর দোষ চাপিয়ে নিষ্কর্ম হয়ে বসে থাকা চলবে না। মানুষকে সব সময়ই আল্লাহর দেওয়া জ্ঞান ও জীবন বিধান অনুযায়ী পথ চলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অন্তরে দৃঢ় ভরসা রাখতে হবে আল্লাহর ওপর। এটাই হলো তক্বদীর বা ভাগ্যলিপির তাৎপর্য।
তক্বদীর সম্পর্কিত আয়াতগুলো নীচে বর্ণিত হলো:
اَلَّذِىْ خَلَقَنِىْ فَهُوَ يَهْدِيْنِ وَالَّذِىْ هُوَ يُطْعِمُنِىْ وَيَسْقِيْنِ وَاِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِيْنِ وَالَّذِىْ يُمِيْتُنِىْ ثُمَّ يُحْيِيْنِ
“আল্লাহ্ আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে পথপ্রদর্শন করেন, তিনি আমাকে খাদ্য ও পানীয় দান করেন, আমি যখন রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন। তিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর পুনর্জীবন দান করবেন।” (২৬:৭৮ – ৮১)
لَه مُعَقِّبٰتٌ مِّنْۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِه يَحْفَظُوْنَه مِنْ اَمْرِ اللهِ ط اِنَّ اللهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتّٰى يُغَيِّرُوْا مَا بِاَنْفُسِهِمْ ط وَاِذَآ اَرَادَ اللهُ بِقَوْمٍ سُوْٓءًا فَلَا مَرَدَّ لَه وَمَا لَهُمْ مِّنْ دُوْنِه مِنْ وَّالٍ هُوَ الَّذِىْ يُرِيْكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَّطَمَعًا وَّيُنْشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِه وَالْمَلٰٓئِكَةُ مِنْ خِيْفَتِه وَيُرْسِلُ الصَّوٰعِقَ فَيُصِيْبُ بِهَا مَنْ يَّشَآءُ وَهُمْ يُجٰدِلُوْنَ فِى اللهِ وَهُوَ شَدِيْدُ الْمِحَالِ
“তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। তিনিই তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের জন্যে এবং আশার জন্যে এবং উত্থিত করেন ঘন মেঘমালা। তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে। তিনি বজ্রপাত করেন, অতঃপর যাকে ইচছা, তাকে তা দ্বারা আঘাত করেন; তথাপি তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতন্ডা করে, অথচ তিনি মহাশক্তিশালী।” (১৩:১১ – ১৩)
فِيْهَا يُفْرَقُ كُلُّ اَمْرٍ حَكِيْمٍ اَمْرًا مِّنْ عِنْدِنَآ اِنَّا كُنَّا مُرْسِلِيْنَ رَحْمَةً مِّنْ رَّبِّكَ اِنَّه هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
“এ রাতে (লাইলাতুল ক্বদরে) প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” (৪৪:৪ – ৬)
وَكَانَ اَمْرُ اللهِ قَدَرًا مَّقْدُوْرًا
“…….আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত ।” (৩৩:৩৮)
قَدْ جَعَلَ اللهُ لِكُلِّ شَىْءٍ قَدْرًا
“…….আল্লাহ্ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।” (৬৫:৩)।
وَجَعَلَ فِيْهَا رَوَاسِىَ مِنْ فَوْقِهَا وَبٰرَكَ فِيْهَا وَقَدَّرَ فِيْهَاۤ اَقْوٰتَهَا فِىۤ اَرْبَعَةِ اَيَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِيْنَ
“তিনি ভূপৃষ্ঠের উপর অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে বহুবিধ কল্যাণ নিহিত রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে খাদ্যের যথাযথ পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন- (জীবিকা) অন্বেষণকারীদের জন্যে।” (৪১:১০)
مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِيْبَةٍ فِى الْاَرْضِ وَلَا فِىۤ اَنفُسِكُمْ اِلَّا فِى كِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ اَنْ نَّبْرَاَهَا ط اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللهِ يَسِيْرٌ
“পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।” (৫৭:২২)
وَاِنْ يَّمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَه اِلَّا هُوَ وَاِن يُرِدْكَ بِخَيْرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضْلِه يُصِيْبُ بِه مَنْ يَشَآءُ مِنْ عِبَادِه وَهُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
“আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কোন কষ্ট আরোপ করেন তাহলে কেউ নেই তা খন্ডাবার মত তাঁকে ছাড়া। পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান করেন, তবে তার মেহেরবানীকে রহিত করার মতও কেউ নেই। তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ দান করতে চান স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত; তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু ।” (১০:১০৭)
مَّا يَفْتَحِ اللهُ لِلنَّاسِ مِنْ رَّحْمَةٍ فَلَا مُمْسِكَ لَهَا وَمَا يُمْسِكْ فَلَا مُرْسِلَ لَه مِنْۢ بَعْدِه وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহের মধ্য থেকে মানুষের জন্য যা দান করেন, তা স্থগিত করার কেউ নেই এবং তিনি যা বারণ করেন, তিনি ব্যতীত তা কেউ প্রেরণ করতে পারে না। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (৩৫:২)
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً اَنْعَمَهَا عَلٰى قَوْمٍ حَتّٰى يُغَيِّرُوْا مَا بِاَنْفُسِهِمْ ط وَاَنَّ اللهَ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ
“তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না, সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়। বস্তুত আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।” (৮:৫৩)
وَمَآ اَصٰبَكُمْ مِّنْ مُّصِيْبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ اَيْدِيْكُمْ وَيَعْفُوْا عَنْ كَثِيْرٍ
“তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।” (৪২:৩০)
مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِيْبَةٍ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ ط وَمَنْ يُّؤْمِنْۢ بِاللهِ يَهْدِ قَلْبَه ط وَاللهُ بِكُلِّ شَىْءٍ عَلِيْمٌ
“আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।” (৬৪:১১)
وَالَّيْلِ اِذَا يَغْشٰى وَالنَّهَارِ اِذَا تَجَلّٰى وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْاُنْثٰىۤ اِنَّ سَعْيَكُمْ لَشَتّٰى فَاَمَّا مَنْ اَعْطٰى وَاتَّقٰى وَصَدَّقَ بِالْحُسْنٰى فَسَنُيَسِّرُه لِلْيُسْرٰى وَاَمَّا مَنْ ۢ بَخِلَ وَاسْتَغْنٰى وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى فَسَنُيَسِّرُه لِلْعُسْرٰى وَمَا يُغْنِىْ عَنْهُ مَالُه اِذَا تَرَدّٰى اِنَّ عَلَيْنَا لَلْهُدٰى وَاِنَّ لَنَا لَلْاٰخِرَةَ وَالْاُوْلٰى
“শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে, শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয় এবং তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন, নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের। অতএব, যে দান করে এবং খোদাভীরু হয়, এবং উত্তম বিষয়কে সত্য মনে করে, আমি তার জন্যে অনুগ্রহ লাভের পথটিকে মসৃণ করে দেব। আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয় এবং উত্তম বিষয়কে মিথ্যা মনে করে, আমি তার জন্য দুর্ভোগের পথটিকে সহজ করে করব। যখন সে অধঃপতিত হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না। আমার দায়িত্ব পথ প্রদর্শন করা। আর আমি মালিক ইহকালের ও পরকালের।” (৯২:১ – ১৩)
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْاَعْلَى الَّذِىْ خَلَقَ فَسَوّٰى وَالَّذِىْ قَدَّرَ فَهَدٰى
“আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন।” (৮৭:১ – ৩)
فَقَدَرْنَا فَنِعْمَ الْقَادِرُونَ
“অতঃপর আমি পরিমিত আকারে সৃষ্টি করেছি, আমি কত সক্ষম স্রষ্টা।” (৭৭:২৩)
مِن نُّطْفَةٍ خَلَقَهُ فَقَدَّرَهُ
“শুক্র থেকে তাকে (মানুষকে) সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে সুপরিমিত করেছেন।” (৮০:১৯)
وَاِن مِنْ شَىْءٍ اِلَّا عِندَنَا خَزَائِنُه وَمَا نُنَزِّلُه اِلَّا بِقَدَرٍ مَّعْلُوْمٍ
“আমার কাছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি।” (১৫:২১)
وَخَلَقَ كُلَّ شَىْءٍ فَقَدَّرَه تَقْدِيْرًا
“…….তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তাকে বিন্যস্ত করেছেন পরিমিতভাবে।” (২৫:২)
اِنَّا خَلَقْنَا الْاِنْسٰنَ مِنْ نُّطْفَةٍ اَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيْهِ فَجَعَلْنٰهُ سَمِيْعًۢا بَصِيْرًا اِنَّا هَدَيْنٰهُ السَّبِيْلَ اِمَّا شَاكِرًا وَاِمَّا كَفُوْرًا
“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, এভাবে যে, তাকে পরীক্ষা করব অতঃপর তাকে করে দিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হবে, না হয় অকৃতজ্ঞ হবে।” (৭৬:২ – ৩)
وَيَعْلَمُ مَا فِى الْاَرْحَامِ ط وَمَا تَدْرِىْ نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا ط وَّمَا تَدْرِىْ نَفْسٌۢ بِاَىِّ اَرْضٍ تَمُوْتُ ط اِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌۢ
“……এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকল্য সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (৩১:৩৪)
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার উপর নির্ভরতা
“……আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।” (৯:১২৯)
সর্ববস্থায় সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা রাখা মু’মিন বান্দার ঈমানের দৃঢ় লক্ষণ। ভাগ্যের উত্থান -পতনে ও সুখ-দুঃখে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর উপর সন্তুষ্ট থাকার মাত্রা নির্ভর করে ঈমানের গভীরতার ওপর। বিপদে পড়লে মানুষ ঈমানী দুর্বলতার কারণে এক পর্যায়ে দিশেহারা ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তখন আল্লাহর উপর তার নির্ভরতা কমে যায়। মানুষ তার স্রষ্টার পরিবর্তে মাখলুকের মুখাপেক্ষি হয়ে ওঠে। অথচ আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম প্রয়োজন সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। পৃথিবীতে এমন অনেক জীব রয়েছে, যারা তাদের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখে না। আল্লাহই তাদেরকে তাদের ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিক দান করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। বিপদে–আপদে, দুঃখ–বেদনায়, অনুতাপ–অনুশোচনায়, ব্যর্থতায়–নিরাশায় আল্লাহ্ মানুষের অতি নিকটে অবস্থান করেন। বান্দা যখন একনিষ্ঠ চিত্তে আল্লাহকে ডাকে তখন তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেন। একমাত্র তিনিই তাদের পরম নির্ভরযোগ্য সাথী ও সহায়তাদানকারী।
মানুষ সব সময়ই অভাবগ্রস্ত ও আল্লাহর নিয়ামত ও রহমতের মুখাপেক্ষি। মানুষ তার যাবতীয় প্রয়োজনের কথা আল্লাহর নিকট পেশ করে। ভাগ্যের ভাল ও মন্দের মালিক আল্লাহ্। আল্লাহই মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করেন, তাকে জীবিকা প্রদান করেন এবং তাকে বিপদমুক্ত করেন। আল্লাহ্ কারো উপকার করতে চাইলে তা যেমন রোধ করার শক্তি কারো নেই, তেমনি তিনি যদি কাউকে তাঁর রহমত থেকে বঞ্চিত করেন তবে তার সহায়তাকারী কেউ নেই।
আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল সম্পর্কিত আয়াতগুলো নীচে প্রদত্ত হলো:
وَلَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ لَيَقُوْلُنَّ اللهُ ط قُلْ اَفَرَءَيْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللهِ اِنْ اَرَادَنِىَ اللهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كٰشِفٰتُ ضُرِّه اَوْ اَرَادَنِىْ بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكٰتُ رَحْمَتِهط قُلْ حَسْبِىَ اللهُ ط عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
“যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে-আল্লাহ। বলুন, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ আমার অনিষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তবে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে ডাক, তারা কি সে অনিষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি রহমত করার ইচ্ছা করলে তারা কি সে রহমত রোধ করতে পারবে? বলুন, আমার পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে।” (৩৯:৩৮)
اِنْ يَّنْصُرْكُمُ اللهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمْ ج وَاِنْ يَّخْذُلْكُمْ فَمَنْ ذَا الَّذِىْ يَنْصُرُكُمْ مِّنۢ بَعْدِه ط وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
“যদি আল্লাহ তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানগনের ভরসা করা উচিত।” (৩:১৬০)
اِنِّىْ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ رَبِّىْ وَرَبِّكُمْ مَّا مِنْ دَآبَّةٍ اِلَّا هُوَ اٰخِذٌۢ بِنَاصِيَتِهَا ط اِنَّ رَبِّى عَلٰى صِرٰطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
“আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদেগার। পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নাই যা তাঁর পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়। আমার পালনকর্তার সরল পথে সন্দেহ নেই।” (১১:৫৬)
فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ اِنَّ اللهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِيْنَ
“…. (হে নবী) অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহ তা’আলার উপর ভরসা করুন আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদের ভালবাসেন।” (৩:১৫৯)
قَالَ رَجُلَانِ مِنَ الَّذِيْنَ يَخَافُوْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمَا ادْخُلُوْا عَلَيْهِمُ الْبَابَ فَاِذَا دَخَلْتُمُوْهُ فَاِنَّكُمْ غٰلِبُوْنَ وَعَلَى اللهِ فَتَوَكَّلُوْۤا اِنْ كُنْتُم مُّؤْمِنِيْنَ
“খোদাভীরুদের মধ্য থেকে দু’ব্যক্তি, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন বলল, তোমরা তাদের উপর আক্রমণ করে দরজায় প্রবেশ কর। অতঃপর তোমরা যখন তাতে প্রবেশ করবে, তখন তোমরাই জয়ী হবে। আর আল্লাহর উপর ভরসা কর যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।” (৫:২৩)
اِنَّ اللهَ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ يُحْىِ وَيُمِيْتُ وَمَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيْرٍ
“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সাম্রাজ্য আল্লাহরই জন্য। তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের জন্য কোন সহায়ও নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই।” (৯:১১৬)
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ط وَمَنْ يَّتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَهُوَ حَسْبُه ط اِنَّ اللهَ بٰلِغُ اَمْرِه قَدْ جَعَلَ اللهُ لِكُلِّ شَىْءٍ قَدْرًا
“তাদেরকে তাদের ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিক দান করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ্ তার কাজ পূর্ণ করে দেন। আল্লাহ্ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন।” (৬৫:৩)
وَاِنَّه لَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ اِنَّ رَبَّكَ يَقْضِىْ بَيْنَهُمْ بِحُكْمِه وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْعَلِيْمُ فَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ اِنَّكَ عَلَى الْحَقِّ الْمُبِيْنِ
“এবং নিশ্চিতই এটা (কুরআন) মু’মিনদের জন্যে হেদায়েত ও রহমত। আপনার পালনকর্তা নিজ কর্তৃত্ব অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। তিনি পরাক্রমশালী, সুবিজ্ঞ। অতএব, আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। নিশ্চয় আপনি সত্য ও স্পষ্ট পথে আছেন।” (২৭:৭৭ – ৭৯)
وَلِلّٰهِ غَيْبُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاِلَيْهِ يُرْجَعُ الْاَمْرُ كُلُّه فَاعْبُدْهُ وَتَوَكَّلْ عَلَيْهِ وَمَا رَبُّكَ بِغٰفِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
“আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্য; আর সকল কাজের প্রত্যাবর্তন তাঁরই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁর উপর ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার পালনকর্তা কিন্তু বেখবর নন।” (১১:১২৩)
فَمَاۤ اُوْتِيْتُمْ مِّنْ شَىْءٍ فَمَتَاعُ الْحَيَوٰةِ الدُّنْيَا وَمَا عِنْدَ اللهِ خَيْرٌ وَّاَبْقٰى لِلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَلٰى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُوْنَ
“অতএব, তোমাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা রয়েছে, তা উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী তাদের জন্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও তাদের পালনকর্তার উপর ভরসা করে।” (৪২:৩৬)
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ اِنْ نَّحْنُ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلٰكِنَّ اللهَ يَمُنُّ عَلٰى مَنْ يَّشَآءُ مِنْ عِبَادِه وَمَا كَانَ لَنَاۤ اَنْ نَّاْتِيَكُمْ بِسُلْطٰنٍ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ وَمَا لَنَآ اَلَّا نَتَوَكَّلَ عَلَى اللهِ وَقَدْ هَدٰىنَا سُبُلَنَا وَلَنَصْبِرَنَّ عَلٰى مَاۤ اٰذَيْتُمُوْنَا وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
“তাদের পয়গম্বর তাদেরকে বলেন: আমারাও তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যার উপরে ইচ্ছা, অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়; ঈমানদারদের আল্লাহর উপর ভরসা করা চাই। আমাদের আল্লাহর উপর ভরসা না করার কি কারণ থাকতে পারে, অথচ তিনি আমাদেরকে আমাদের পথ বলে দিয়েছেন। তোমরা আমাদেরকে যে পীড়ন করেছ, তজ্জন্যে আমরা সবর করব। ভরসাকারীগণের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত।” (১৪:১১ – ১২)
قُلْ هُوَ الرَّحْمَنُ اٰمَنَّا بِهِ وَعَلَيْهِ تَوَكَّلْنَا فَسَتَعْلَمُوْنَ مَنْ هُوَ فِىْ ضَلَالٍ مُّبِيْنٍ
“বলুন, তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখি এবং তাঁরই উপর ভরসা করি। সত্ত¡রই তোমরা জানতে পারবে, কে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় আছে।” (৬৭:২৯)
وَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ وَكَفٰى بِاللهِ وَكِيْلًا
“আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কার্যনির্বাহীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।” (৩৩:৩)
اِنَّمَا النَّجْوٰى مِنَ الشَّيْطٰنِ لِيَحْزُنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَلَيْسَ بِضَآرِّهِمْ شَيْـًٔا اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
“এই কানাঘুষা তো শয়তানের কাজ; মু’মিনদেরকে দুঃখ দেয়ার দেয়ার জন্যে। তবে আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত সে তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। মু’মিনদের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা করা।” (৫৮:১০)
وَمَا تَوْفِيْقِىْۤ اِلَّا بِاللهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَاِلَيْهِ اُنِيْبُ
“…….আল্লাহর মদদ দ্বারাই কিন্তু কাজ হয়ে থাকে, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই ।” (১১:৮৮)
اِنِ الْحُكْمُ اِلَّا للهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَعَلَيْهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
“…….নির্দেশ আল্লাহরই চলে। তাঁরই উপর আমি ভরসা করি এবং তাঁরই উপর ভরসা করা উচিত ভরসাকারীদের।” (১২:৬৭)
حَسْبِىَ اللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوْ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
“……আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত আর কারো বন্দেগী নেই। আমি তাঁরই ভরসা করি এবং তিনিই মহান আরশের অধিপতি।” (৯:১২৯)
قُل لَّن يُصِيْبَنَآ اِلَّا مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلٰىنَا وَعَلَى اللهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ
“আপনি বলুন, আমাদের কিছুই ঘটবে না, কিন্তু যা আল্লাহ আমাদের জন্য নির্ধারিত রেখেছেন; তিনি আমাদের কার্যনির্বাহক। আল্লাহর উপরই মু’মিনদের ভরসা করা উচিত।” (৯:৫১)
আল্লাহর ইচ্ছা
“আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের জন্যে তো প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।” (৭৬:৩০ – ৩১)
মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এক ও অদ্বিতীয় স্বাধীন সত্তা, এ মহাবিশ্বের স্রষ্টা এবং সার্বভৌম ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। তিনি তাঁর ইচ্ছামত সমগ্র সৃষ্টিকে পরিচালিত করেন। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা–ই করেন। তিনি তাঁর সকল কাজকর্মের জন্য জবাবদিহিতার ঊর্ধে। মহান আল্লাহ্ মানুষকে এ দুনিয়ায় তাঁর প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছেন এবং মানুষের মধ্যেও কিছু ইচ্ছা শক্তি প্রদান করেছেন যাতে তাকে পরীক্ষা করা যায়। মানুষ তার ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগ করে ভালো ও মন্দ কাজের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, কিন্তু তা জবাবদিহিতার ঊর্ধে নয়। মানুষকে তার প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর নিকট বিচার দিবসে জবাবদিহি করতে হবে। তাই মানুষের উচিত হবে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে নিজ ইচ্ছাকে সমর্পিত করে তাঁর নির্দেশ মোতাবেক জীবন যাপন করা এবং আখিরাতের সাফল্য অর্জন করা।
এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো নিম্নে পেশ করব হলো:
قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِى الْمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَآءُ بِيَدِكَ الْخَيْرُ اِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ تُوْلِجُ الَّيْلَ فِى النَّهَارِ وَتُوْلِجُ النَّهَارَ فِى الَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَىَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَىِّ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَآءُ بِغَيْرِ حِسَابٍ
“(হে নবী) বলুন, ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। তুমি রাতকে দিনের ভেতরে প্রবেশ করাও এবং দিনকে রাতের ভেতরে প্রবেশ করিয়ে দাও। আর তুমিই জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করে আন এবং মৃতকে জীবিতের ভেতর থেকে বের কর। আর তুমিই যাকে ইচ্ছা বেহিসাব রিযিক দান কর।” (৩:২৬ – ২৭)
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ لَه مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ط يُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ وَيَغْفِرُ لِمَنْ يَّشَآءُ ط وَاللهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
“তুমি কি জান না যে আল্লাহর নিমিত্তেই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য। তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।” (৫:৪০)
وَ مَا تَشَآءُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ یَّشَآءَ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلِیْمًا حَكِیْمًا
“আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন ইচ্ছা পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।” (৭৬:৩০)
وَلَوْ شَآءَ رَبُّكَ لَاٰمَنَ مَنْ فِی الْاَرْضِ کُلُّهُمْ جَمِیْعًا ؕ اَفَاَنْتَ تُکْرِهُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوْنُوْا مُؤْمِنِیْنَ وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تُؤْمِنَ اِلَّا بِاِذْنِ اللّٰهِ ؕ وَیَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَی الَّذِیْنَ لَا یَعْقِلُوْنَ
“আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসতে সমবেতভাবে। তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তী করবে ঈমান আনার জন্য? আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না তাদের উপর।” (১০:৯৯ – ১০০)
وَ مَا تَشَآءُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ یَّشَآءَ اللّٰهُ رَبُّ الْعٰلَمِیْنَ
“তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অভিপ্রায়ের বাইরে অন্য কিছুই ইচ্ছা করতে পার না।” (৮১:২৯)
وَ یُذْهِبْ غَیْظَ قُلُوْبِهِمْ ؕ وَیَتُوْبُ اللّٰهُ عَلٰی مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ
“…….. আর আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা ক্ষমাশীল হবে, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (৯:১৫)
قُلْ اِنَّ رَبِّى يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ مِنْ عِبَادِه وَيَقْدِرُ لَه وَمَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِنْ شَىْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهط وَهُوَ خَيْرُ الرّٰزِقِيْنَ
“বলুন, আমার পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে দেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা’।” (৩৪:৩৯)
وَاللّٰهُ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ
“……..আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন।” (২:২১২2)
فَهَدَى اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا لِمَا اخْتَلَفُوا فِيهِ مِنَ الْحَقِّ بِإِذْنِهِ ۗوَ اللّٰهُ یَہْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ
“অতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়েত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদ লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন।” (২:২১৩)
یَعْلَمُ مَا بَیْنَ اَیْدِیْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۚ وَلَا یُحِیْطُوْنَ بِشَیْءٍ مِّنْ عِلْمِہٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ
“…… তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। …….” (২:২৫৫)
لِّلَّهِ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ وَإِن تُبْدُوا مَا فِي أَنفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُم بِهِ اللَّهُ ۖ فَیَغْفِرُ لِمَنْ یَّشَآءُ وَیُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللّٰهُ عَلٰی کُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ“যা কিছু আকাশসমূহে রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, সব আল্লাহরই। যদি তোমরা মনের কথা প্রকাশ কর কিংবা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের কাছ থেকে তার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি শাস্তি দেবেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।” (২:২৮৪)يُؤْتِى الْحِكْمَةَ مَنْ يَّشَآءُط وَمَنْ يُّؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ اُوْتِىَ خَيْرًا كَثِيْرًا ط وَمَا يَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُوْلُوْا الْاَلْبٰبِ
“তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভূত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।” (২:২৬৯)
اَللّٰهُ یَجْتَبِیْۤ اِلَیْهِ مَنْ یَّشَآءُ وَ یَہْدِیْۤ اِلَیْهِ مَنْ یُّنِیْبُ
“……. আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকেই নিজের দিকে নিয়ে আসেন (মনোনীত করেন) এবং যে ব্যক্তি তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে দ্বীনের পথ প্রদর্শন করেন।” (৪২:১৩)
لِلّٰهِ مُلْکُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ یَخْلُقُ مَا یَشَآءُ ؕ یَهَبُ لِمَنْ یَّشَآءُ اِنَاثًا وَیَهَبُ لِمَنْ یَّشَآءُ الذُّکُوْرَ اَوْ یُزَوِّجُهُمْ ذُکْرَانًا وَاِنَاثًا ۚ وَیَجْعَلُ مَنْ یَّشَآءُ عَقِیْمًا ؕ اِنَّہٗ عَلِیْمٌ قَدِیْرٌ
“নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।” (৪২:৪৯ – ৫০)
اَلَّذِىْ خَلَقَكَ فَسَوّٰىكَ فَعَدَلَكَ فِىْۤ اَىِّ صُوْرَةٍ مَّا شَآءَ رَكَّبَكَ
“যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাকে সুবিন্যস্ত করেছেন এবং সুষম করেছেন। যিনি তোমাকে তাঁর ইচ্ছামত আকৃতিতে গঠন করেছেন।” (৮২:৭ – ৮)
بِنَصْرِ اللّٰهِ ؕ یَنْصُرُ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَهُوَ الْعَزِیْزُ الرَّحِیْمُ
“আল্লাহর সাহায্যে — তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।” (৩০:৫)
وَ لَا تَقُوْلَنَّ لِشَایْءٍ اِنِّیْ فَاعِلٌ ذٰلِكَ غَدًا اِلَّاۤ اَنْ یَّشَآءَ اللّٰهُ ۫ …..
“আপনি কোন কাজের বিষয়ে বলবেন না যে, সেটি আমি আগামী কাল করব। ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ বলা ব্যতিরেকে। ……” (১৮:২৩ – ২৪)
وَلَوْلَا إِذْ دَخَلْتَ جَنَّتَكَ قُلْتَ مَا شَاءَ اللَّهُ لَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ ۚهِ
“…….. তবে যখন তুমি তোমার বাগানে প্রবেশ করলে, তখন একথা কেন বললে না; আল্লাহ যা চান, তাই হয়। আল্লাহর দেয়া ব্যতীত কোন শক্তি নেই।” (১৮:৩৯)
يُعَذِّبُ مَنْ يَّشَآءُ وَيَرْحَمُ مَنْ يَّشَآءُ وَاِلَيْهِ تُقْلَبُوْنَ وَمَاۤ اَنْتُمْ بِمُعْجِزِيْنَ فِى الْاَرْضِ وَلَا فِى السَّمَآءِ وَمَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ وَّلِىٍّ وَّلَا نَصِيْرٍ
“তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা রহমত করেন। তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। তোমরা স্থলে ও অন্তরীক্ষে আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন হিতাকাঙ্খী নেই, সাহায্যকারীও নেই।” (২৯:২১ – ২২)
وَمَا تَشَآءُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ يَّشَآءَ اللهُ اِنَّ اللهَ كَانَ عَلِيْمًا حَكِيْمًا يُدْخِلُ مَنْ يَّشَآءُ فِىْ رَحْمَتِه وَالظّٰلِمِيْنَ اَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا اَلِيْمًۢا
“আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যতিরেকে তোমরা অন্য কোন অভিপ্রায় পোষণ করবে না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। তিনি যাকে ইচ্ছা তাঁর রহমতে দাখিল করেন। আর যালেমদের জন্যে তো প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তুদ শাস্তি।” (৭৬:৩০ – ৩১)
وَلَوْ شَآءَ اللهُ مَا اقْتَتَلَ الَّذِيْنَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَيِّنٰتُ وَلٰكِنِ اخْتَلَفُوْا فَمِنْهُمْ مَّنْ اٰمَنْ وَمِنْهُمْ مَّنْ كَفَرَ وَلَوْ شَآءَ اللهُ مَا اقْتَتَلُوْا وَلٰكِنَّ اللهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيْدُ
“…….. আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে পরিস্কার নির্দেশ এসে যাবার পর পয়গম্বরদের পেছনে যারা ছিল তারা লড়াই করতো না। কিন্তু তাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়ে গেছে। অতঃপর তাদের কেউ তো ঈমান এনেছে, আর কেউ হয়েছে কাফের। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে তারা পরস্পর লড়াই করতো, কিন্তু আল্লাহ তাই করেন, যা তিনি ইচ্ছা করেন।” (২:২৫৩)
مَنْ یَّشَاِ اللّٰهُ یُضْلِلْهُ ؕ وَمَنْ یَّشَاْ یَجْعَلْهُ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ
“যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে, তারা অন্ধকারের মধ্যে মূক ও বধির। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালিত করেন।” (৬:৩৯)
هُوَ الَّذِىْ يُصَوِّرُكُمْ فِى الْاَرْحَامِ كَيْفَ يَشَآءُ ط لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ
“তিনিই সেই আল্লাহ, যিনি তোমাদের আকৃতি গঠন করেন মায়ের গর্ভে, যেমন তিনি ইচ্ছে করেছেন। তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। তিনি প্রবল পরাক্রমশীল, প্রজ্ঞাময়।” (৩:৬)