৯ম অধ্যায় : কিছু বিস্ময়কর ঘটনা

পবিত্র কুরআনের আয়াত শ্রবণে জিন জাতির হেদায়েত প্রাপ্তির ঘটনা

হযরত মুহাম্মদ (সা) তায়েফে সংঘটিত দৃঃখজনক ঘটনার পর সেখান থেকে মক্কায় ফেরার পথে নাখলা নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করেন। তিনি ফজরের নামাযে যখন পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতরত ছিলেন তখন একদল জিন এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর কন্ঠ নিঃসৃত কুরআনের বাণী শ্রবণ করে। এতে তাদের অন্তরে হেদায়েত প্রাপ্তি ঘটে। পবিত্র কুরআনের ৭২নং সূরা জিন নাযিল করে আল্লাহ্ রব্বুল আলামীন তাঁর নবীকে এ ঘটনা বিবৃত করেছেন:

قُلْ اُوْحِیَ اِلَیَّ اَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوْۤا اِنَّا سَمِعْنَا قُرْاٰنًا عَجَبًا ۝ یَّہْدِیْۤ اِلَی الرُّشْدِ فَاٰمَنَّا بِہٖ ؕ وَ لَنْ نُّشْرِكَ بِرَبِّنَاۤ اَحَدًا ۝ وَّ اَنَّہٗ تَعٰلٰی جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَۃً وَّ لَا وَلَدًا ۝

“বলুন : আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কুরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছে: আমরা বিস্ময়কর কুরআন শ্রবণ করেছি; যা সৎপথ প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না। এবং আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদের পালনকর্তার মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। তিনি কোন পত্নী গ্রহণ করেননি এবং তাঁর কোন সন্তান নেই।” (৭২:১ – ৩)

وَاِذْ صَرَفْنَاۤ اِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُوْنَ الْقُرْاٰنَ فَلَمَّا حَضَرُوهُ قَالُوۤا اَنْصِتُوْا فَلَمَّا قُضِىَ وَلَّوْا اِلَىٰ قَوْمِهِمْ مُّنْذِرِيْنَ۝ قَالُوا يٰقَوْمَنَاۤ اِنَّا سَمِعْنَا كِتٰبًا أُنْزِلَ مِنْۢ بَعْدِ مُوسَىٰ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِىۤ اِلَى الْحَقِّ وَاِلَىٰ طَرِيْقٍ مُّسْتَقِيْمٍ۝ یٰقَوْمَنَاۤ اَجِیْبُوْا دَاعِیَ اللّٰهِ وَاٰمِنُوْا بِہٖ یَغْفِرْ لَکُمْ مِّنْ ذُنُوْبِکُمْ وَیُجِرْکُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِیْمٍ ۝ وَمَنْ لَّا یُجِبْ دَاعِیَ اللّٰهِ فَلَیْسَ بِمُعْجِزٍ فِی الْاَرْضِ وَلَیْسَ لَہٗ مِنْ دُوْنِہٖۤ اَوْلِیَآءُ ؕ اُولٰٓئِكَ فِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ

“যখন আমি একদল  জিনকে আপনার প্রতি আকৃষ্ট করছেলিাম, তারা কুরআন পাঠ শুনছলি, তারা যখন কুরআন পাঠের জায়গায় উপস্থতি হল, তখন পরস্পর বলল, চুপ থাক। অতঃপর যখন পাঠ সমাপ্ত হল, তখন তারা তাদের সম্প্রদায়রে কাছে সর্তককারীরূপে ফিরে গলে । তারা বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়, আমরা এমন এক কিতাব শুনেছি যা মূসার পর অবর্তীণ হয়েছে। এ কিতাব র্পূবর্বতী সব কিতাবের প্রত্যায়ন করে,  সত্যর্ধম ও সরলপথরে দিকে পরচিালতি করে । হে আমাদের সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর । তিনি তোমাদের গুনাহ মার্জনা করবেন । আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর কথা মানবে না, সে পৃথিবীতে আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তার কোন সাহায্যকারী থাকবে না। এ ধরনের লোকই প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত ।” (৪৬:২৯ – ৩২)

উপরোক্ত ঘটনায় এ কথা প্রমাণিত হয় যে, নবী করীম (সাঃ) শুধু মানবজাতির পথ–প্রদর্শক ছিলেন না তিনি ছিলেন সৃষ্টিকুলের রহমত স্বরূপ।

 

 ইসরা ওয়াল মি’রাজের বিস্ময়কর ঘটনা

হযরত মুহাম্মদুর রাসূল্লাহ (সা) এর জীবনের একটি অলৌকিক ঘটনা হলো “আল ইসরা ওয়াল মি‘রাজ,” অর্থাৎ নৈশ ভ্রমণ ও ঊর্ধ্বলোক গমন যা সংঘটিত হয়েছিল তাঁর নবুওতের দশম বর্ষে, মতভেদে রজব মাসের ছাব্বিশ তারিখের রাতে। এ রজনীর এক স্বল্পতম সময়ে অল্লাহ্ রব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় নবীকে তাঁর কুদরতের নিদর্শন ও গুপ্ত রহস্যসমূহ অবলোকন করানোর জন্য মক্কার কা’বা প্রাঙ্গণ থেকে  মসজিদুল আক্বসা ও ঊর্ধলোক ভ্রমণ করিয়েছিলেন। ঘটনটি ঘটেছিল দু’টি পর্বে। প্রথম পর্বে মক্কার ’মসজিদুল হারাম’ থেকে জেরুযালেমের ’মসজিদুল আক্বসা’ পর্যন্ত ভ্রমণ যা ইসরা নামে অভিহিত এবং দ্বিতীয় পর্বে মসজিদুল আক্বসা থেকে ঊর্ধ্বলোকে আরশে–আযীম পর্যন্ত ভ্রমণ যা মি’রাজ নামে পরিচিত। এশার নামাযের পর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কা’বা শরীফের সন্নিকটে তাঁর চাচাত বোন উম্মে হানীর গৃহে ঘুমিয়েছিলেন। এমন সময় হযরত জিব্রাইল (আঃ) এসে তাঁকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললেন এবং এক মহা-যাত্রার প্রস্তুতি নিতে বললেন। নবীজী  (সাঃ) ওযু করে নিলেন। ঘরের বাইরে এসে তিনি দেখতে পেলেন “বুরাক” নামক দু’পাখা বিশিষ্ট একটি শ্বেতবর্ণ জন্তু যার অবয়ব গাধার মত। তবে আকারে তা ছিল গাধার চেয়ে বড় আর খচ্চরের চেয়ে ছোট। নবীজী  (সাঃ) এর  ভ্রমণের বাহন হিসেবে এটিকে জিব্রাইল (আঃ) সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। উল্লেখযোগ্য যে, বিদ্যুৎ–গতিসম্পন্ন বলেই এর নাম হয়েছে ‘বুরাক’। জিব্রাইল (আঃ) এর নির্দেশ মোতাবেক রসূল (সাঃ) বুরাকের উপর আরোহণ করলেন। এটি তীব্র বেগে বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে ছুটে চললো। সঙ্গে ছিলেন জিব্রাইল (আঃ)। পথিমধ্যে তাঁরা সিনাই পর্বতের যে স্থানে আল্লাহ্ তায়ালা হযরত মূসা নবী (আঃ)-র সাথে কথোপকথন হয়েছিল সে স্থানটি যিয়ারত করলেন। এরপর তাঁরা হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্মস্থান জেরুযালেমের বেথেলহেম ‍যিয়ারত করে  মসজিদুল আক্কসায় পৌঁছান। পুরো ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যেই সংঘটিত হয়েছিল। বোরাকটিকে তিনি একটি পাথরের সাথে বেঁধে রেখে মসজিদুল আক্কসায় প্রবেশ করেন এবং সেখানে তাঁর সম্মানে আগত বিশিষ্ট নবীগণের সাথে তিনি নিজ ইমামতীতে নামায আদায় করেন।

ইসরা সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের আয়াতটি নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

سُبْحٰنَ الَّذِىۤ اَسْرٰى بِعَبْدِه لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَى الْمَسْجِدِ الْاَقْصَا الَّذِىْ بٰرَكْنَا حَوْلَه لِنُرِيَه مِنْ اٰيٰتِنَآ اِنَّه هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ۝

“পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত – যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দৃষ্টিসম্পন্ন।” (১৭:১)

এরপর শুরু হয় ঊর্ধ্বলোক অভিমুখে তাঁর দ্বিতীয় পর্বের ভ্রমণ। নবীজী (সাঃ)-কে নিয়ে বুরাক ছুটে চলে নিঃসীম নীলিমায়। সাথে আছেন জিব্রাইল (আঃ)। মুহূর্তেই তাঁরা পৌঁছে গেলেন প্রথম আসমানের দ্বারপ্রান্তে। সেখানে প্রহরায় নিয়োজিত আছেন অসংখ্য ফেরেশতা যাতে জিন–শয়তানেরা প্রবেশ না করতে পারে। প্রবেশ দ্বারে জিব্রাইল (আঃ)-কে প্রশ্ন করা হলো: ‘আপনার সঙ্গী কি প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত? জিব্রাইল (আঃ) উত্তরে নবীজী (সাঃ) এর পরিচয় দিয়ে বললেন, ’ইনি মুহাম্মদ (সাঃ) – আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রসূল এবং আসমানে প্রবেশের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত।’ একই প্রশ্ন প্রতিটি আসমানের প্রবেশ দ্বারে করা হয়েছিল এবং জিব্রাইল (আঃ) একই উত্তর দিয়েছিলেন। এভাবে তাঁরা সপ্তম আসমান পেরিয়ে পৌঁছে গেলেন মহাকাশের শেষ প্রান্তে আরশের ডান দিকে অবস্থিত “সিদরাতুল মুন্তাহা” নামক বৃক্ষের সন্নিকটে – যা মহাকাশ সীমান্ত নামে অভিহিত। জিব্রাইল (আঃ) ও বুরাকের যাত্রা এখানেই সমাপ্ত হলো। এর পরই অবস্থিত অনন্ত বিস্তৃত “আরশে আযীম” যেখানে মহান আল্লাহ্ সমাসীন রয়েছেন। ইতোমধ্যে নবীজী (সাঃ) এর সাথে প্রথম আসমানে মানবজাতির আদিপিতা আদম (আঃ) এর সাক্ষাৎ ঘটে। এছাড়াও সেখানে তিনি অসংখ্য মখলুককে মহান আল্লাহর প্রশংসারত অবস্থায় দেখতে পান। এভাবে একের পর এক আসমান পরিভ্রমণকালে তিনি হযরত ঈসা, মূসা, দাউদ, নূহ, ইব্রাহীম, প্রমুখ বিশিষ্ট নবীবর্গের সাক্ষাৎ পান। সপ্তম আসমান যেখানে ফেরেশতাদের নিবাসস্থল সেখানে তাঁদের ইবাদতখানা ‘বায়তুল মা’মুর’ অবস্থিত। নবী করীম (সাঃ) সেখানে মওতের ফেরেশতা আজ্রাইল (আঃ)-কে তাঁর অধীনস্থ ফেরেশতাবাহিনীসহ কর্মরত অবস্থায় দেখতে পান। প্রতিটি আসমানে তিনি বিভিন্ন ধরনের অভিনব দৃশ্যাবলী অবলোকন করেন।

“সিদরাতুল মুন্তাহা” থেকে নবীজী (সাঃ)-কে একাকী নিয়ে যাওয়া হয় আরশে আযীমে। আরশের অতি সন্নিকটে দুই ধনুকের জ্যা পরিমাণ দূরত্বে তিনি পৌঁছে যান এবং দিব্যদৃষ্টিতে মহান আল্লাহর নূর প্রত্যক্ষ করেন। সেখানে আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের সাথে তাঁর যে কথোপকথন হয় তার সূচনাটি ছিল এরূপ:

প্রথমে নবী করীম (সাঃ) তাঁর প্রভুর সনে নিবেদন করেন: ”যাবতীয় সম্মান, যাবতীয় ইবাদত – বন্দেগী ও যাবতীয় পবিত্রতা আল্লাহর জন্য।” উত্তরে মহান আল্লাহ বলেন: ”হে নবী; আপনার উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক এবং রহমত ও বরকত নাযিল হোক।” উম্মতের কান্ডারী নবী করীম (সাঃ) এর উত্তরে বলেন: ”আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাগণের প্রতি।” মহান আল্লাহ এবং নবীজী (সাঃ)-র এ কথোপকথন শুনে জিব্রাইল (আঃ) বললেন: ”আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর বান্দা ও রসূল।” উপরোক্ত কথোপকথনটি “তাশাহুদ” নামে পরিচিত যা প্রতিটি নামাযের বৈঠকে পঠিত হয়।

হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) এর বর্ণনা মতে, ‘মি’রাজে মহান আল্লাহর তরফ থেকে উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য বিশেষ উপহার হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের বিধান জারী করা হয়। প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাযের বিধান দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু উম্মতের কথা চিন্তা করে নবীজী (সাঃ) আল্লাহ্ তায়ালার কাছে তা কমানোর জন্য অনুরোধ জানান। অতীব দয়ালু আল্লাহ্ তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নির্ধারণ করেন, তবে তিনি এর সাওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তের সমান বহাল রাখেন।’ (তিরমিযি শরীফ)। এছাড়া মি’রাজের রজনীতে আল্লাহর তরফ থেকে ’সূরা বাকারা’র শেষ দু’টি আয়াত নাযিল হয়েছিল এবং উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্যে যারা শিরক করেনি তাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়ার ওয়াদা প্রদান করা হয়েছিল।

মি’রাজে আল্লাহর রসূল (সাঃ) বেহেশত ও দোযখ অবলোকন করেন। বেহেশতে স্বর্গীয় মনোরম দৃশ্যাবলী ও পরম সুখ – শান্তির আবাসসমূহ এবং নেক বান্দাদের জন্য সংরক্ষিত আল্লাহর বিশেষ নিয়ামতসমূহ তাঁকে দেখানো হয়। অপরদিকে দোযখের ভয়াবহ অগ্নিকুন্ড ও ভীষণ শাস্তিসমূহের নমুনা তাঁকে প্রদর্শন করা হয়। বোখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফের বিভিন্ন হাদীসে মি’রাজের বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ রয়েছে। এছাড়া মেশকাত শরীফের ৫৬১২ থেকে ৫৬১৫ পর্যন্ত হাদীসসমূহে এর বিশদ বর্ণনা রয়েছে।

ইসরা-ওয়াল-মি’রাজ শারীরিক না আত্মিকভাবে সংঘটিত হয়েছিল তা নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। মক্কার কাফের কুরাইশরা মি’রাজের ঘটনাটি অবিশ্বাস ও অস্বীকার করেছিল। অতি স্বল্প সময়ে ঘটে যাওয়া এ ঘটনাটি তাদের কাছে অদ্ভূত মনে হয়েছিল। তাই তারা এ নিয়ে নবীজী (সাঃ)-কে উন্মাদ আখ্যা দিয়ে তাঁর সাথে হাস্যরস ও ঠাট্টা–বিদ্রূপ করতে শুরু করে। হযরত আবু বকর (রাঃ) নির্দ্বিধায় তা বিশ্বাস করেছিলেন বলেই নবীজী (সাঃ) তাঁকে “সিদ্দিক” (সত্যবাদী) উপাধিতে ভূষিত করেন।

পবিত্র কুরআনে মি’রাজ সম্পর্কিত আয়াতসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَاٰىۤ۝ اَفَتُمٰرُوْنَه عَلٰى مَا يَرٰى۝ وَلَقَدْ رَاٰهُ نَزْلَةً اُخْرٰى۝ عِنْدَ سِدْرَةِ الْمُنْتَهٰى۝ عِنْدَهَا جَنَّةُ الْمَاْوٰىۤ۝ اِذْ يَغْشَى السِّدْرَةَ مَا يَغْشٰى۝ مَا زَاغَ الْبَصَرُ وَمَا طَغٰى۝ لَقَدْ رَاٰى مِنْ اٰيٰتِ رَبِّهِ الْكُبْرٰىۤ۝

“রাসূলের অন্তর মিথ্যা বলেনি যা সে দেখেছে। তোমরা কি বিষয়ে বিতর্ক করবে যা সে দেখেছে? নিশ্চয় সে তাকে আরেকবার দেখেছিল, সিদরাতুলমুন্তাহার নিকটে, যার কাছে অবস্থিত বসবাসের জান্নাত। যখন বৃক্ষটি যদ্দ্বারা আচ্ছন্ন হওয়ার, তদ্দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল। তাঁর দৃষ্টি–বিভ্রম হয় নি এবং সীমালংঘনও করেনি। নিশ্চয় সে তার পালনকর্তার মহান নিদর্শনাবলী অবলোকন করেছে ।” (৫৩:১১-১৮)

وَاِذْ قُلْنَا لَكَ اِنَّ رَبَّكَ اَحَاطَ بِالنَّاسِ وَمَا جَعَلْنَا الرُّءْيَا الَّتِىۤ اَرَيْنٰكَ اِلَّا فِتْنَةً لِّلنَّاسِ وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُوْنَةَ فِى الْقُرْاٰنِ وَنُخَوِّفُهُمْ فَمَا يَزِيْدُهُمْ اِلَّا طُغْيٰنًا كَبِيْرًا۝

“এবং স্মরণ করুন, আমি আপনাকে বলে দিয়েছিলাম যে, আপনার পালনকর্তা মানুষকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং যে দৃশ্য আমি আপনাকে দেখিয়েছি তাও কুরআনে উল্লেখিত অভিশপ্ত বৃক্ষ কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্যে। আমি তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করি। কিন্তু এতে তাদের অবাধ্যতাই আরও বৃদ্ধি পায়।” (১৭:৬০)

অধ্যায়সমূহ